আলী আকবর রুপু আর নেই
বিনোদন ডেস্কঃ বাংলাদেশের বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু আর নেই (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এ খবর নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা ফারিয়া নাজ।
বরেণ্য এ সুরস্রষ্টা বেশ কিছু দিন ধরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে আর বাসায় ফিরতে পারলেন না তিনি, চিরতরে চলে গেলেন।
ফারিয়া নাজ জানান, আজ বাদ আসর গুলশান আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা শেষে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাভিশন কার্যালয়ে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে তার নিবাসস্থল বড় মগবাজারের ডাক্তারগলিতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আলী আকবর রুপুর স্ত্রী নার্গিস আকবর তার স্বামীর বিদেহী রূহের মাগফিরাতের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছিলেন রুপু। তার কিডনির সমস্যাও ছিল। মাস সাতেক ধরে তার কিডনির ডায়ালাইসিস চলছিল। অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। ৯ ফেব্রুয়ারি কিডনির ডায়ালাইসিস করার সময় তার স্ট্রোক হয়। পাশাপাশি হৃদরোগে আক্রান্ত হন রুপু।
আলী আকবর রুপুর সুর ও সংগীত পরিচালনায় অসংখ্য গান জনপ্রিয় হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘যারে ঘর দিলা সংসার দিলা রে’, ‘দস্যু যেমন মুখোশ পরে প্রবেশ করে ঘরে’, ‘দরদিয়া’, ‘এ অনিশ্চয়তা’, ‘এ পশলা বৃষ্টি’। এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘পদ্মপাতার পানি নয়’, শাকিলা শর্মার ‘তোমাকে দেখলেই মৌনতা ভুলে যাই’, সাবিনা ইয়াসমিন, কনক চাঁপা ও সামিনা চৌধুরীর ‘সব চাওয়া কাছে পাওয়া’, সাবিনা ইয়াসমিনের ‘প্রতিটি শিশুর মুখ’, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর ‘কবিতার মতো মেয়েটি, গল্পের মতো ছেলেটি’, ‘সামিনা চৌধুরীর ‘জানতে চেয়ো না কোন সে বেদনাতে’, দিনাত জাহান মুন্নীর ‘পুরনো কাপড়ের মতো আমি আজ অবহেলিত’, মৌটুসীর ‘বারে বারে পোড়াবাঁশি এত রাতে আর ডেকো না’। তিনটি টিভি চ্যানেলের উদ্বোধনী সংগীত তৈরি করেছেন তিনি। গানগুলো হল- একুশে টিভির ‘নব শতকের সম্ভাবনার দিনে’, এনটিভির ‘বাংলাদেশের বিজয়ের আলো জ্বেলে’ আর এটিএন বাংলার ‘দিনরাত এটিএন এশিয়া ইউরোপে’।
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে আলী আকবর রুপু প্রায় ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন গানের সুর ও কম্পোজ করেছেন। ১৯৮২ সালের দিকে ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডে কিছু দিন গিটার ও কিবোর্ড বাজিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চারণ ছেড়ে দেন। তার পর ‘উইন্ডস’ নামে একটি ব্যান্ড গঠন করেছিলেন। অবশ্য তার পরিচয় মূলত গীতিকার ও সুরকার হিসেবে। নিজ কণ্ঠে গেয়েছেন হাতেগোনা কয়েকটি গান। দেশের স্বনামধন্য শিল্পীদের প্রায় সবাই তার সুর করা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।