‘তিনিতো আমাদের কিংবদন্তী’ সৎ সাংবাদিকতার প্রতিকৃত
মো. ফয়ছল আলম।। অনুষ্ঠান শুরুর অপেক্ষা চলছিলো। সাদা মনের মানুষ খ্যাত সিলেটর প্রথিতযশা সাংবাদিক আব্দুল মালিক চৌধুরী অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত। তাকে দীর্ঘ দিন পর দেখলেন অনেক সহকর্মী। অনেকে তার পাশে বসে ছবি তুলছেন। কুশলাদি জানছেন। এমন সময় সিলেটের রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রিয় মুখ জেলা জাসদের সভাপতি ও সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ উপস্থিত হলেন। তিনি আব্দুল মালিক চৌধুরীকে দেখেই জড়িয়ে ধরলেন, বললেন, তিনিতো আমাদের কিংবদন্তী। সৎ সাংবাদিকতার প্রতিকৃত । আমি আপনাকে দেখে খুব খুশি হলাম। শুধু লোকমান আহমদ নন, সকল সাংবাদিকই অনেক খুশি হয়েছিলেন তাদের এই অগ্রজকে পাশে পেয়ে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটে বাংলাভাষীর উদ্যোগে সিলেট প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের সম্মানে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই কিংবদন্তিই ছিলেন প্রধান অতিথি। তিনি যে প্রধান অতিথি সে কথা আগে কাউকে জানানো হয়নি। ‘সারপ্রাইজ’ হিসেবে সেটি গোপন রাখা হয়েছিল। দীর্ঘদিন থেকে তিনি সাংবাদিকতায় অনুপস্থিত। ইত্তেফাকের প্রতিনিধি হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রায় দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে। সিলেট প্রেসক্লাবের একাধিকবার সভাপতি-সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন বয়স হয়েছে। বর্তমানে বলা চলে একবারেই অবসর সময় কাটান পারিবারিক গন্ডির মধ্যে। ব্যক্তিগত জীবনে অত্যন্ত সাদাসিদে আব্দুল মালিক চৌধুরী সিলেটের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিলেটে প্রশাসন তাকে সাদা মনের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মাননা জানিয়েছিলো। সিলেট প্রেসক্লাব মুহিবুন্নেছা পদকও পেয়েছেন তিনি। আসলেই তিনি আমাদের কাছে এক জীবন্ত কিংবদন্তী।
বৃটেন প্রবাসী সাংবাদিক ওলিউর রহমান খানের সম্পাদনায় সাংবাদিক বাংলাভাষী পোর্টালের উদ্যোগে আয়োজিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত ছিলেন তারা সকলেই মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনেছেন এই কীর্তিমান সাংবাদিকের বক্তব্য। বক্তারাও ছিলেন তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে সকলের দৃষ্টি ছিলো তার প্রতি। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সাংবাদিকরা তাকে কাছে পেয়ে ছিলেন বেশ তৃপ্ত। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ লোকমান আহমদ ও সিলেট জেলা বারের সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীনও ছিলেন আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথি। সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল কাদের তাপাদার, প্রবীণ ফটো সাংবাদিক আতাউর রহমান আতাও ছিলেন বিশেষ অতিথির আসনে। বিশেষ করে এই স্বজ্জন ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতিতে চার ঘন্টার অনুষ্ঠানে একটুও ছন্দ পতন ঘটেনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন -সিলেট প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সভাপতি ইকরামুল কবির, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, সিলেট জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী, দৈনিক কাজিরবাজার এর বার্তা সম্পাদক সোয়েব বাসিত। শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন ইসমাইল হোসেন।
সংবর্ধিতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সিনিয়র সহ সভাপতি এনামুল হক জুবের, সহ সভাপতি এম এ হান্নান, সহ সাধারণ সম্পাদক ইয়াহইয়া ফজল, কোষাধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন শিহাব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক নূর আহমদ, পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালেদ আহমদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. ফয়ছল আলম, শুয়াইবুল ইসলাম ও দিগেন সিংহ।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সাংবাদিক সিলেট প্রেসক্লাবের সদ্য বিদায়ী সিনিয়র সহ সভাপতি মুহাম্মদ আমজাদ হোসাইন, সিলেটের ডাক এর চীফ রিপোর্টার ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, দৈনিক কাজিরবাজার এর নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ সুজাত আলী, বাংলাভিশনের শামসুল ইসলাম শামীম, সিলেটের ডাকের মুহাম্মদ তাজ উদ্দিন, প্রভাত বেলার মুহিব আলী, ভোরের কাগজের ফারুক আহমদ, দৈনিক সিলেটের ডাকের এম আহমদ আলী, আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, কাউসার চৌধুরী, এনামুল হক রেনু, আনাস হাবিব কলিন্স, আহমাদ সেলিম, দৈনিক জালালাবাদের আহবাব মোস্তফা খান, মুনশী ইকবাল, সিলেট বাণীর ফটো সাংবাদিক মো. দুলাল হোসেন, আব্দুল জব্বার, সবুজ সিলেটের কয়েছ আহমদ, শুভ প্রতিদিনের আব্দুল মজিদ, বিজয়ের কন্ঠেরে নুরুল ইসলাম, আলোকিত বাংলাদেশ এর আব্দুল্লাহ আল নোমান, ফটো সাংবাদিক আব্দুল মোমিন ইমরান, এটিএম তুরাব, রেজা রুবেল। এছাড়া অনুষ্ঠানে সিলেট ছাত্র ও যুব কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এইচ এম আব্দুর রহমান, সমাজসেবী কামাল আহমদ, ইকবাল উদ্দিন, সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী মাসুম আহমদ, সংবাদ কর্মী দাইয়ান চৌধুরী, ইমরান আহমদ,আব্দুল লতিফ চৌধুরী, জানু মিয়া,আনোয়ার হোসেন, রিপন আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক আর সূধীজনের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটি সফলভাবেই সম্পন্ন হয়। আরা যারা সংবর্ধিত ছিলাম, তারাও প্রবীণ এই সাংবাদিকের হাত ছুঁয়ে বাংলাভাষী’র দেয়া সম্মানসুচক ক্রেস্ট নিয়ে ঘরে ফিরি হাসিমুখে। দীর্ঘজীবি হোন শ্রদ্ধেয় আব্দুল মালিক চৌধুরী।