নীরবতা ভাঙার ডাককে স্বীকৃতি দিল টাইম
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ নীরবতা ভেঙে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তুলে ধরা নারীদের পারসন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করেছে টাইম ম্যাগাজিন। ‘সাইলেন্স ব্রেকার’ বা নীরবতা ভঙ্গকারী হিসেবে অভিহিত করা এই নারীদের এই আন্দোলন প্রথমে হলিউড প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টেইনের বিরুদ্ধে ওঠা স্রোতের মত অভিযোগের মধ্যে দিয়ে হয়েছে।
#মি_টু হ্যাশট্যাগ দিয়ে নারীরা তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। তবে টাইম বলেছে, হ্যাশট্যাগ শুধুমাত্র বিশাল একটা আন্দোলনের অংশমাত্র। টাইমের এডিটর ইন চিফ এডওয়ার্ড ফেলসেনথাল বলেছেন, গত কয়েক দশকে এটি ছিল সবচেয়ে বেশি গতিশীল সামাজিক পরিবর্তন। শত শত নারী ও কিছু পুরুষের ব্যক্তিগত সাহসের উপর ভর করে নিজেদের নিগ্রহের গল্পটা জানানোর মধ্য দিয়ে এর শুরু।
টাইম প্রচ্ছদের মাধ্যমে সর্বত্র বিদ্যমান যৌন নিপীড়নের চিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছে, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার নারীদের রাখা হয়েছে। প্রচ্ছদে হার্ভি ওয়াইনস্টেইনের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে অভিযোগ করা সেলিব্রেটি অ্যাশলি জুড ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করে জয় লাভ করা টেইলর সুইফট রয়েছেন। এছাড়া রয়েছেন ৪২ বছর বয়সী মেক্সিকোর একজন স্ট্রবেরি চাষী ইসাবেল পাসচুয়াল (প্রকৃত নাম নয়), সাক্রামেন্টোতে কর্মরত কর্পোরেট লবিস্ট আদামা ইওয়ু। এছাড়াও আছেন উবারের প্রকৌশলী সুসান ফাউলার যার অভিযোগে উবারের প্রধান নির্বাহী পদচ্যুত হন।
টাইম জানিয়েছে, এই আন্দোলনের কোনো নেতা বা নিজস্ব মতবাদ নেই। হ্যাশট্যাগ #মি_টুর মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ যে তাদের গল্পটি বলেছেন সেটাও পুরো চিত্রটা নয় বরং এর অংশমাত্র। যে নারী ও পুরুষরা নীরবতা ভেঙেছেন তাদের কোনো নির্দিষ্ট বর্ণ, আয় শ্রেণী নেই, বরং সারা বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান। সম্মিলিতভাবে তারা তাদের লজ্জাকে রাগ ও বিক্ষোভে পরিণত করেছে, পরিবর্তন চেয়ে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে এবং অনেক ক্ষমতাশালী পুরুষকে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে নারী নিগ্রহের অভিযোগ ওঠা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে দিয়েই এই আন্দোলনের সূচনা। সেই ট্রাম্পই হয়েছেন টাইমের পারসন অব দ্য ইয়ারের এবারের রানার আপ।
১৯২৭ সাল থেকে টাইম ম্যান অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করে আসছে যার মাধ্যমে ভাল অথবা মন্দভাবে বছরের সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে এমন ব্যক্তি অথবা ঘটনাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিকেই এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ২০১১ সালে ইবোলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা ব্যক্তিদের ‘ইবোলা ফাইটার’ নামে পারসন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করে, ২০১৪ সালে ঘোষণা করা হয় কথিত আরব বসন্তকে। ২০০৬ সালে ইউজার জেনারেটেড ইন্টারনেট কনটেন্টের গুরুত্ব বোঝাতে স্রেফ ব্যক্তিকেই পারসন অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়। বিবিসি।