জেরুজালেম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশেই থাকছে সৌদি আরব
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইহুদিবাদী ইসরাইলের স্বার্থে সৌদি আরব পর্দার আড়ালে থেকে যে তৎপরতা চালাচ্ছে তাতে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত হয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের নেতারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিলিস্তিনের অন্তত চারজন নেতা এ উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে আমেরিকা বৃহত্তর দর কষাকষির যে পরিস্থিতি তৈরি করেছে তাতে সৌদি আরবের সমর্থন রয়েছে, যা সরাসরি ইহুদিবাদী ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষা করবে। ফিলিস্তিনের চার নেতা শুক্রবার জানান, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন, যা বাস্তবায়ন করলে শরণার্থী হয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনি জনগণের দেশে ফেরার সুযোগ থাকবে না এবং ভবিষ্যৎ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হতে পারবে না বায়তুল মুকাদ্দাস বা জেরুজালেম।
তারা বলেছেন, এ প্রস্তাব এতটাই ইসরাইলের পক্ষে যায় যে, তাতে ফিলিস্তিনের স্বার্থ ভয়াবহভাব ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে প্রস্তাবটির বিষয়বস্তু পরিষ্কার করে জানাননি তারা। রয়টার্স এ খবর দিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাই ও সিনিয়র উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এ প্রস্তাব তৈরি করেছেন এবং যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের মাধ্যমে তা উপস্থাপন করা হয়েছে। জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে মুসলিম বিশ্বসহ পশ্চিমা অনেক দেশ ক্ষোভে ফুঁসছে। কিন্তু সৌদি আরব ট্রাম্পের ঘোষণার মৌখিক প্রতিবাদ জানিয়েই ক্ষান্তি দিয়েছে। তারা দৃশ্যত এখন কুশনার প্রণীত ‘শান্তি প্রক্রিয়ায়’ ব্যাপকভাবে সমর্থন করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছে এবং তা এখন সামনে এগিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে চলতি বছরের নভেম্বরে মাহমুদ আব্বাসকে রিয়াদের বৈঠকে অবহিত করেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি আব্বাসের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চান।
এদিকে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ট্রাম্পের স্বীকৃতির পর সৃষ্ট ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে খবর প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সৌদি আরব। সৌদি রয়েল কোর্ট থেকে দেশটির সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের সম্পাদকদের কাছে এ বিষয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এতে জেরুজালেম নিয়ে বেশি খবর প্রচার না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর। এদিকে নিউজ ১০ নামের একটি ইসরায়েলি টেলিভিশন জানিয়েছে, সৌদি আরব ও মিসরের সবুজ সংকেত পেয়েই জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তেলআবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস দখলকৃত জেরুজালেমে স্থানান্তরে ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার প্রতিও সমর্থন দিয়েছে সৌদি আরব ও মিসর। তবে এ ইস্যুতে দেশ দুটি এখন যে প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানাচ্ছে সেটা তাদের প্রকৃত অবস্থান নয়। বরং এটা পূর্বপরিকল্পিত ও বিভ্রান্তিকর।