তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,মিয়ানমারঃ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের ওপারে ভারি অস্ত্রসহ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা সাড়া দেয়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবি সদর দফতর থেকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।বান্দরবান প্রতিনিধি জানিয়েছে, আতঙ্কে নোম্যান্সল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া সাড়ে ছয় হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবিসহ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরওয়ার কামাল।
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানায়, বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনাপাড়া নোম্যান্সল্যান্ডের ওপারে মিয়ানমার অতিরিক্ত সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করেছে। সকাল থেকে কয়েকটি ট্রাক এবং মোটরসাইকেলযোগে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান নিয়েছে।তারা মাইকিং করে রোহিঙ্গাদের নোম্যান্সল্যান্ড থেকে চলে যেতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইটপাটকেল ছুড়ে মারছে। আতঙ্কে নোম্যান্সল্যান্ডের রোহিঙ্গারা চিৎকার হৈ-হুল্লোড় করে বাংলাদেশে ঢোকার জন্য কয়েকটি স্থানে জড়ো হয়েছে ক্যাম্পে। খবর পেয়ে সীমান্তের তুমব্রু পয়েন্টে বিজিবি টহল এবং প্রহড়া বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। অতিরিক্ত সদস্যও মোতায়েন করা হয়েছে সীমান্ত এলাকায়।নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরওয়ার কামাল জানান, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার ট্রাক-পিকআপে করে অতিরিক্ত সীমান্তরক্ষী বাহিনী জড়ো করেছে মিয়ানমার। সীমান্তের কোনাপাড়া নোম্যান্সল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। তবে আশঙ্কার কিছু নেই। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে বিজিবি এবং প্রশাসন।
বিজিবি বান্দরবান সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানান, মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় প্রায় সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে থাকে। আবার পরবর্তীতে সরিয়ে নেয়। কিন্তু হঠাৎ করে তুমব্রু সীমান্তে কেন অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে বুঝতে পারছি না। কিন্তু সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায়ও বিজিবি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে।রোহিঙ্গা দলনেতা দিল মোহাম্মদ ও আবদুল মোতালেব বলেন, মিয়ানমারের পুলিশ-সেনাবাহিনী নোম্যান্সল্যান্ড থেকে চলে যেতে মাইকিং করছে কয়েক দিন ধরে। রাতের বেলায় মদের বোতল এবং ইটপাটকেল ছুড়ে মারছে ক্যাম্পের ঝুপড়ি ঘরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্যাম্পের ওপারে গাড়িতে করে মিয়ানমারের পুলিশ-সীমান্তরক্ষী বাহিনী জড়ো হয়েছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। আমরা বাঁচতে চাই, মিয়ানমারে ফিরে গেলে আমাদের হত্যা করা হবে।