সু চির পদক প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মিউজিয়াম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক,যুক্তরাষ্ট্রঃ মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা হত্যা-নির্যাতন বন্ধে উদ্যোগ না নেওয়ায় মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে দেওয়া পদক প্রত্যাহার করে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম।দি গার্ডিয়ান ও টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে,  ওয়াশিংটনের এই জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বুধবার এক চিঠিতে বলেছে- ‘এটি খুবই পরিতাপের বিষয় যে, আমরা সু চির এই পদক প্রত্যাহার করছি। যদিও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া আমাদের জন্য কঠিন ছিল।হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম সু চির পদক প্রত্যাহারের বিষয়টি জানিয়ে মঙ্গলবার তাকে লেখা চিঠিটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে বুধবার। এতে বলা হয়েছে, সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণে মদদ দিয়েছে এবং যেসব জায়গায় নির্যাতন সংঘটিত হয়েছে সেখানে সাংবাদিকদের যেতে দেওয়া হয়নি।

গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রেক্ষাপটে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন সে দেশের স্টেট কাউন্সিলর ডিফ্যাক্টো সরকারপ্রধান অং সান সু চি।রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চির বেশ কয়েকটি পদক ইতোমধ্যে প্রত্যাহার হয়েছে । সু চিকে দেওয়া ‘ফ্রিডম অব দি সিটি অব অক্সফোর্ড অ্যাওয়ার্ড এবং ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব ডাবলিন’ প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাজ্যের এই দুই শহর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া এক যুগ আগে সু চিকে দেওয়া সম্মাননা স্থগিত করে ইউনিসন। এটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন।রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধ না হলে সু চিকে বিচারের মুখোমুখি করার কথা বলেছেন নোবেল বিজয়ী তিন নারী শিরিন এবাদি, তাওয়াক্কুল কারমান ও মরিয়েড মগুয়ার। গত মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে তারা অভিযোগ করেন, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে পরিকল্পিত গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এর দায় নিতে হবে মিয়ানমার সরকারকে ।মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন অং সান সু চি। এজন্য তিনি দেড় দশক গৃহবন্দিও ছিলেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদানের জন্য ২০১২ সালে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে সম্মানজনক এলি উইসেল পদক দেওয়া হয়েছিল সু চিকে । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের নৃশংসতার শিকারদের স্মরণে প্রতিষ্ঠিত হয় এই মিউজিয়াম। প্রথম এই পদক দেওয়া হয়েছিল নাৎসিদের নির্যাতন থেকে বেঁচে যাওয়া নোবেলজয়ী উইসেলকে। তিনি ছিলেন এই মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।

Leave a Reply

Developed by: TechLoge

x