‘বিশ্রাম নিতে’ পদত্যাগ করলেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,মিয়ানমারঃ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট টিন চিয়াও পদত্যাগ করেছেন । বুধবার প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ৭১ বছরের চিয়াওয়ের পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। তবে বেশ কয়েক মাস আগে সরকারি একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে বেশ শারীরিকভাবে বেশ দুর্বল দেখা গেছে। তখন থেকেই এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।পদত্যাগ বিষয়ে প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, টিন চিয়াও বিশ্রামে যেতে চান। আর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রাক্তন জেনারেল মিন্ট সোয়ে। এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে।২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন টিন চিয়াও। এর আগে দীর্ঘ সামরিক শাসনের পর ২০১৫ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে আউং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। ওই নির্বাচনের মাধ্যমে মিয়ানমারে দীর্ঘ ৫০ বছরের সামরিক শাসনের অবসান ঘটে।কিন্তু বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করায় সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ ছিল না সু চির। সামরিক জান্তা সংবিধানে একটি ধারা সংযোজন করে যে, বিদেশি নাগরিককে বিয়ে করলে দেশের শীর্ষ পদে কেউ বসতে পারবেন না। সুচি বিয়ে করেছেন এক ব্রিটিশ নাগরিককে। যে কারণে প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি সু চি।
এদিকে প্রেসিডেন্ট হতে না পারলেও সু চি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ডান হাত হিসেবে পরিচিত টিন চিয়াওকে প্রেসিডেন্ট পদে বসান। সে সময় সংবিধান সংশোধন করে সু চির জন্য স্টেট কাউন্সেলরের পদ সৃষ্টি করা হয়। রাষ্ট্রের অধিকাংশ নির্বাহী ক্ষমতাও দেওয়া হয় তার হাতে।প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে এমন এক সময়ে প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করেছেন, যখন রাখাইনে সেনা অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তোপের মুখে রয়েছে সু চির সরকার। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে।এই সংকট সমাধানে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় সু চিও বিশ্বজুড়ে তীব্র নিন্দা ও চাপের মুখে রয়েছেন। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট টিন চিয়াওয়ের পদত্যাগের কারণ শারীরিক অসুস্থতা নাকি রোহিঙ্গা সংকট অথবা অন্য কোনো বিষয় রয়েছে তা এখনও নিশ্চিত নয়।