আজ বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের ১০২ তম জন্মদিন
সিলেট প্রতিনিধি।। আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, বন্দে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে, রঙ এর দুনিয়া তরে চায় না, গাড়ি চলে না, আমার মাটির পিনজিরাই সোনার ময়নারে, বসন্ত বাতাসে সইগো,কোন মেস্তরি নাও বানাইছে, সখী কুঞ্জ সাজাও গো, এ ধরনের অসংখ্য গানের রচয়িতা বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের ১০২ তম জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার।
বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলাধীন উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
এই উপলক্ষ্যে শাহ আব্দুল করিমের গ্রামের বাড়ী দিরাইয়ের উজানধলে শাহ আব্দুল করিমের মাজারে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
দারিদ্রতা ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। সঙ্গীত জীবনে প্রেরণা তার স্ত্রী আফতাবুন্নেসা। তিনি তাকে আদর করে ডাকতেন ‘সরলা’।ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ ও পুঞ্জু শাহ থেকে।
স্বশিক্ষিত বাউল শাহ আব্দুল করিম প্রায় পাঁচ শতাধিক গান লিখেছেন এবং সুরারোপ করেছেন। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে তাঁর ১০টি গান ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও এখনও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।
বাউল শাহ আব্দুল করিম ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আজীবন সম্মাননা ২০০৪, সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস আজীবন সম্মাননা ২০০৫, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি সম্মাননা ২০০৬,বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা ২০০৮ লাভ করেন।
কাগমারী সম্মেলনে সঙ্গীত পরিবেশন করে এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাহচর্য তার জীবনের মধুরতম স্মৃতি বহন করে। তিনি ২০০৯ সালে ১২ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।