পত্রিকা পড়ে দেশ চালাই না: প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি পত্রিকা পড়ে দেশ চালাই না। দেশ চালাই দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ভালোবেসে।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কম্বোডিয়া সফর উপলক্ষে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার বিপুল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে সৌদি সরকার, এমন খবর বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও বাংলাদেশে দুই/একটি পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সৌদিতে যে বিশাল শপিং মল সম্পদ পাওয়া গেছে, এটা তো আমরা কিছু করিনি। এটা বিদেশ থেকেই সংবাদ এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা এখানে অনেকেই তো সংবাদপত্রের মালিক। সম্পাদক অনেকেই আছেন, যারা বিভিন্ন চ্যানেলে আছেন। কোথায় আপানাদেরকে তো এটা নিয়ে খুব একটা নিউজ দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখলাম না। রহস্যটা কী? আপনারা কি ওখানে বিনা পয়সার শপিং করার কোনো কার্ড পেয়েছেন? কেউ এই নিউজটা দিতে পারলেন না। আমি যদি জিজ্ঞাসা করি, সাপোজ, এই ধরনের নিউজ যদি আমার ব্যাপারে হতো বা আমার পরিবারের ব্যাপারে হতো, আপনারা তো হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। আমাদের অপরাধ কী? আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আর খালেদা জিয়া মাফ পায় কেন? যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছে, জিয়াউর রহমান, তারপর খালেদা জিয়া এসে মন্ত্রী বানিয়েছে। জাতির জনকের খুনিদেরকে এমপি বানিয়েছে। খুনিদেরকে মদদ দিয়েছে, সেজন্য কি তাদের সাত খুন মাপ?’
প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই প্রশ্নটা যেহেতু আমার মনে এসেছে আপনাদের সেই প্রশ্নটা করলাম। আমি কোনো পত্রিকাতেই দেখলাম না, এটা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করতে, বিষয়টা কী? কেন এত দুর্বলতা? কীসের জন্য? এই যে টাকা পাচার, মানি লন্ডারিং এটা তো বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার ছেলেরা করেছে, এটা তো আমরা বের করিনি।’
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ পত্রিকা কিন্তু আমিই পারমিশন দিয়েছি। আমার সরকারের আমলে দেওয়া পত্রিকা। সেই পত্রিকাগুলোর এতটুকু সৎসাহস হলো না কেন এই নিউজগুলো দেওয়ার? বাংলাদেশে কোনো প্রাইভেট চ্যানেল ছিল না। কোনো সরকার সাহস করে নাই, যে প্রাইভেট চ্যানেল দেবে। আমি দিয়ে দিয়েছি। ৪৬টি চ্যানেলের মধ্যে ২৩টি চ্যানেল তো চলছে। অথছ দুটি চ্যানেল কিছু নিউজ দিল, বাকিরা দিল না কেন? হতে পারে, এত সম্পদের মালিক যারা, তারা জানে কীভাবে মুখ বন্ধ করতে হয়। সবার মুখে মনে হয় সেরকম কিছু রসগোল্লা ঢুকে দিয়েছে, যার জন্য সবাই মুখ বন্ধ করে আছে। তাহলে আপনাদের প্রশ্নের কী জবাব দেব বলেন আমাকে? এতটুকু সৎসাহস যদি না থাকে, তাহলে তো আপনাদের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’
এক সময় সারা বিশ্বে গেলে মনে করত ভিক্ষা করতে আসছে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সমীহ করে চলে। আগে যেখানে ছিল ভিক্ষুক জাতি এখন হচ্ছে উন্নয়নের রোল মডেল। এটাও তো সবাই উপলব্ধি করবেন না, করেনও না। আর পত্রিকা মানেই হচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে না লিখলে নাকি পত্রিকা চলেই না। পত্রিকা চালানোর ব্যবসাটাই মনে আছে, কিন্তু দেশের যে উন্নয়ন দেখেও দেখে না। এতে তো আমাদের কিছু করার নাই। আমি তো পত্রিকার পড়ে আর দেশ চালাই না। দেশ চালাই দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ভালোবেসে। যা বাবার কাছ থেকে শিখেছি, দেশের উন্নয়ন কীভাবে করতে হবে। সেই চিন্তা করেই চালাই। সেজন্যই সফলতা আসে দেশের।’
আজ বাংলাদেশ বিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মর্যাদাটা ধরে রাখবেন, নাকি ওই মানি লন্ডারিং। শপিং মলের মালিক অথবা খুন-খারাপি করা বোমাবাজি, মানুষ খুন, আগুনে পুড়িয়ে মারা, এটা তো জনগণের ওপর নির্ভর করে। এখানে আমার কোনো কিছু নাই। আমার একটাই চাওয়া, আমরা দেশটাকে স্বাধীন করেছি, এই দেশটাকে উন্নত করব। সমৃদ্ধশালী করব। স্বাধীনতার চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ব। সেটাই লক্ষ্য। ওই একটা লক্ষ্য নিয়েই চালাচ্ছি এবং চালাতে থাকব। আর জনগণের যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে। কারণ আমি নিজেই স্লোগান দিয়েছে- আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। আমরা সেই নীতিতেই বিশ্বাস করি। ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই। কাজেই আফসোসও থাকবে না। কারণ সুযোগ পেয়েছি, প্রমাণ করেছি- হ্যাঁ উন্নয়ন করা যেতে পারে।’
More News from বাংলাদেশ
-
খুলনায় মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হত্যা, ৩ আসামী গ্রেফতার,আসামীদের সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন
-
গোলাপগঞ্জে আব্দুল মতিন ও ছায়া খাতুন ট্রাস্টের পক্ষে পিপিই প্রদান (ভিডিও সহ)