জ্ঞান ফিরেছে রাবেয়া-রুকাইয়ার : সক্রিয় বিকল্প রক্তনালী
নিউজ ডেস্কঃ মাথা জোড়া লাগানো অবস্থায় জন্ম নেয়া শিশু দু’টির অস্ত্রোপচারে আরো একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। ১৮ মাসের রাবেয়া-রুকাইয়া মাথায় যে সংযুক্ত রক্ত নালী ছিল যা দিয়ে শিশু দু’টি রক্ত ভাগাভাগি করত তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এটা এজন্য করা হয়েছে যেন মাথায় পৃথক রক্তনালী তৈরি হয় যেন তা দিয়েই শিশু দুটি স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে পারে।
আজ বুধবার সকাল ৯টায় এ অস্ত্রোপচার শুরু হয় এবং প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর দুপুর দেড়টায় তা শেষ হয়। রক্তনালী বন্ধ করে দেয়ার পর শিশু দু’টির জ্ঞান ফিরেছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, আমাদের দেখার বিষয় ছিল মূল রক্তনালী বন্ধ করে দেয়া হলে বিকল্প রক্ত চলাচলের পথ তৈরি হয় কি না। এ পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে বলে আমরা দাবি করতে পারি। সংযুক্ত নালিটি বন্ধ করে দেয়ার পর বিকল্প রক্ত চলাচলের পথ তৈরি হয়েছে এবং রক্ত চলাচল শুরু হয়েছে। এখন আমরা পরবর্তি ধাপে কি করণীয় তা নিয়ে ভাবতে পারি। আগামী তিন মাস শিশু দু’টিকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। মাথায় পৃথক রক্তনালী তৈরি হলে তিন মাস পর আবার আরেকটি অস্ত্রোপচার করা হবে।
ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে শিশু দু’টির অস্ত্রোপচার কক্ষেই মৃত্যু হতে পারত। অবশ্য বিভিন্ন পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হয়েই আমরা জোড়া রক্তনালী বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেই। তবু অস্ত্রোপচারের মাঝ পথে শিশু দু’টির বাবা-মাকে বিষয়টি পুরোপুরি অবহিত করি। পরবর্তি কি হতে পারে তা তাদের জানিয়ে এবং অনুমতি নিয়ে স্থায়ীভাবে রক্তনালী বন্ধ করে দেই। রক্তনালী বন্ধ করে দেয়ার পরই আমরা লক্ষ্য করি যে বিকল্প পথে রক্ত পাচ্ছে শিশুদের মাথা।
ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, যে পদ্ধতিতে চিকিৎসকরা এগুচ্ছেন তা বিশ্বের জন্য এবং আমাদের জন্য প্রথম অভিজ্ঞতা। প্রথম ২৪ ঘণ্টা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তবে ওরা ভালো আছে, আমাদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে আছে।
আগামীকাল জমজ মাথার এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান করা হবে। রিপোর্ট দেখে পরবর্তি চিকিৎসা শুরু করা হবে।উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার রাবেয়া-রুকাইয়ার মাথায় এনজিওগ্রাম করে রক্তনালী কি পজিশনে আছে জানতে চেষ্টা করেছিলেন। রাবেয়া ও রুকাইয়া ২০১৬ সালের জুলাই মাসে পাবনা শহরের একটি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয়। গর্ভাবস্থায়ই শিশু দুটির মাথা জোড়া লাগানো ছিল। চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের আটলঙ্কা গ্রামের স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা দম্পতির দ্বিতীয় রাবেয়া ও রুকাইয়া।
More News from বাংলাদেশ
-
খুলনায় মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হত্যা, ৩ আসামী গ্রেফতার,আসামীদের সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন
-
গোলাপগঞ্জে আব্দুল মতিন ও ছায়া খাতুন ট্রাস্টের পক্ষে পিপিই প্রদান (ভিডিও সহ)