আশরাফুলের পাঁচ সেঞ্চুরির রেকর্ড

স্পোর্টস ডেস্কঃ ফিক্সিংয়ের কালিমা মেখে দীর্ঘদিন ক্রিকেটে নিষিদ্ধ ছিলেন আশরাফুল। প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞার পর শর্তসাপেক্ষে ফিরলেও তর সইছিল না যেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরছেন একের পর এক সেঞ্চুরি করে। শতদল মেলে ধরা পারফরম্যান্সে ফের নজর কাড়তে চাইছেন সকলের। আজকেও তার ব্যতিক্রম হলো না।রবিবার রেলিগেশন লিগে কলাবাগানের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন বাংলাদেশের পোস্টার বয়। আশরাফুলের অপরাজিত ১০২ রানের ইনিংসের ভর করে ব্রাদার্সের বিপক্ষে ২৫২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে তার দল।  আশরাফুলের ১৩৭ বলের ইনিংসে ছিল ১০ চার। আর এই ইনিংসই তাকে নিয়ে গেছে রেকর্ডবুকে! টানা তিন সেঞ্চুরি নিয়ে চলতি প্রিমিয়ার লিগে তার ব্যাট থেকে এসেছে মোট পাঁচটি সেঞ্চুরি। তাতেই বেশ কিছু রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি।ক্রিকেট দেবতাও বোধহয় আশরাফুলের পক্ষেই ছিলেন। নয়তো এই রেকর্ডের ভাগিদার হতে পারতেন না। হতেন পাকিস্তানের জহুর এলাহী! সেঞ্চুরির জন্য শেষ বলে প্রয়োজন ছিল দুই রান। সোরওয়ার্দী শুভকে চার মেরে আশরাফুল তুলে নেন টানা তৃতীয় সেঞ্চুরি। সেই সঙ্গে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। যার পাঁচটিই আবার এই মৌসুমে।১৯৯৯-২০০০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ লিস্ট ‘এ’ক্রিকেটের মর্যাদা পায়। তার আগে কলাবাগানের হয়ে পাকিস্তানের জহুর এলাহী সর্বাধিক পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। লিগে এক আসরে করা সর্বাধিক সেঞ্চুরির কীর্তি ছিল এটাই। কিন্তু জহুর এলাহীর করা ওই সেঞ্চুরি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় আশরাফুলই এখন বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বাধিক পাঁচ সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাটসম্যান।

শুধু তাই নয় লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে  টানা তিনটি সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবেও রেকর্ড গড়েছেন।   মোহামেডানের বিপক্ষে ১২৭, অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে ১০৩ নট আউট এবং ব্রাদার্সের বিপক্ষে ১০২ নটআউট; এই তিন সেঞ্চুরি বাংলাদেশের প্রথম পোস্টারবয়কে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়।১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারা এবং ২০০৩ সালে অসি ক্রিকেটার মাইক হাসি লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে টানা ৫টি সেঞ্চুরি করেছিলেন। আশরাফুলের সামনে অবশ্য সেই সুযোগ নেই। কেননা চলতি লিগের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেলেছেন।রবিবারে এই সেঞ্চুরির সুবাদে আশরাফুল চলতি মৌসুমে রান সংগ্রাহকের তালিকাতে শীর্ষে উঠে গেছেন। পাঁচ সেঞ্চুরি ও এক হাফসেঞ্চুরিতে ৬৬.৫০ গড়ে আশরাফুলের সংগ্রহ ৬৬৫ রান।আশরাফুল ছাড়াও অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চলতি মৌসুমে সেঞ্চুরি বন্যা বইয়ে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের হয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের পাঁচটি সেঞ্চুরি ছাড়াও প্রাইম দোলেশ্বরের লিটন দাস এবং আবাহনীর নাজমুল হোসেন শান্ত ৩টি করে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।

এর বাইরে দুটি করে সেঞ্চুরি আছে এনামুল হক বিজয়, ফজলে মাহমুদ, মার্শাল আইয়ুব, শাহরিয়ার নাফীস, জহুরুল ইসলাম অমির। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সর্বশেষ প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে নিজেকে চেনাতে পারেননি আশরাফুল। লিগের ৫ ম্যাচে করেছিলেন ১২৩ রান।  তবে এই মৌসুমের শুরুটা করেছিলেন সেঞ্চুরি দিয়ে। এরপরই নিজেকে চেনানোর লড়াই শুরু। টুর্নামেন্টের শেষ দিকে থেকে দারুণ ব্যাটিং করা আশরাফুল নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন খুব ভালোভাবেই। যদিও দারুণ ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যানের রানের তোলার গতি কিছুটা ধীর গতির ছিল।প্রসঙ্গত, বিপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ের দায়ে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৬ সালে জাতীয় লিগ দিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরেন মোহাম্মদ আশরাফুল।  ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি।চলতি বছরের আগস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি পূরণ করবেন আশরাফুল।  এরপর বিপিএল, বিসিএল এবং জাতীয় দলে খেলার জন্য নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। তবে জাতীয় দলে খেলতে হলে পারফরম্যান্স ও ফিটনেসের বিকল্প নেই। ফের জাতীয় দলে খেলতে চাইলে কঠিন পরীক্ষাতেই বসতে হবে আশরাফুলকে।

Leave a Reply

Developed by: TechLoge

x