উইন্ডিজকে ২৫৬ রানের টার্গেট দিল বাংলাদেশ
স্পোর্টস ডেস্কঃ সূচনালগ্নেই ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ।ইনিংসের শুরুতে পায়ে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন লিটন।এরপর ক্রিজে এসেই ফেরেন ইমরুল।পরে দলকে টানেন তামিম- মুশফিক।দুজনই ফিফটি করে সেঞ্চুরি জুটির রেকর্ড গড়ে ফিরলে দলের হাল ধরেন সাকিব।তাকে সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ।মিস্টার কুল ফিরলেও ফিফটি তুলে নেন সাকিব।এরপর কেউ জ্বলে উঠতে পারেননি।শেষ পর্যন্ত তিন ফিফটিতে ৩ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে টাইগাররা।প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ।এ ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় স্বাগতিকরা।এখন এ রান নিয়ে মাশরাফি বাহিনী জিততে পারে কিনা-তাই দেখার।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল।ফলে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ।ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে লেগ স্টাস্পে দ্রুতগতির ইয়র্কার ছুড়েন ওশানে থমাস।বলটি ফ্লিক করতে যান লিটন দাস।তবে ব্যাটে-বলে হয়নি।সরাসরি আঘাত করে পেছনের পায়ের (ডান পা) গোড়ালিতে।বল চলে যায় লেগে।তা থেকে ১ রানও আসে।কিন্তু রান নিয়েই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।বোঝা যায় আঘাতটি তীব্র ছিল।ফিজিও এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।তাতেও লাভ হয়নি।পরে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন এ ওপেনার।সেখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে।সেই পরিস্থিতিতে ক্রিজে আসেন ইমরুল কায়েস।তবে সাম্প্রতিক ফর্মের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি।ওশানের অফস্টাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে শাই হোপকে ক্যাচ দিয়ে আসেন।ফেরার আগে রানের খাতায় খুলতে পারেননি এ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
পরে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ওঠেন তামিম ইকবাল।ধীরে ধীরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তারা।একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে দারুণ মেলবন্ধন গড়ে ওঠে।দুজনই ব্যাটে ছোটান স্ট্রোকের ফুলঝুরি। উভয়ই ফিফটি তুলে প্রতিপক্ষ শিবিরে চোখ রাঙাতে থাকেন।এতে দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে বাংলাদেশ।তবে হঠাৎই খেই হারান তামিম।দেবেন্দ্র বিশুকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে কেমার রোচকে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি।ফেরার আগে ৬৩ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় কাঁটায় ৫০ রান করেন ড্যাশিং ওপেনার।এটি তার ক্যারিয়ারের ২৬তম ফিফটি।সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি মুশফিক।তিনিও তামিমের পথ ধরে সাজঘরে ফেরেন।ওশানে থমাসের দুর্দান্ত ডেলিভেরিতে উইকেটের পেছনে শাই হোপের গ্লাভসবন্দি হন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
৮০ বলে ৫ চারে ৬২ রান করে ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা শুরু করেন মুশফিক।ক্যারিয়ারে ২০তম ফিফটি তুলে ফেরার আগে তামিমের সঙ্গে শতরানের জুটি গড়েন তিনি।এ সুবাদে একটি চূড়ায় ওঠেন তারা।বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি জুটি গড়ার নজির স্থাপন করেন দুই ব্যাটিং স্তম্ভ।দেশসেরা ওপেনারের সঙ্গে এটি ছিল তার পঞ্চম শতরানের জুটি।এর আগে চারটি সেঞ্চুরি জুটি নিয়ে এতদিন শীর্ষে ছিলেন সাকিব ও মুশফিক।
তার পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।দারুণ খেলছিলেন তারা।জমাট বেধে গিয়েছিল তাদের জুটি।তাতে স্বাচ্ছন্দে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ।কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন।পথচ্যুত হন মাহমুদউল্লাহ। রোভম্যান পাওয়েলের বলে ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে শিমরন হেটমায়ারের তালুবন্দি হন তিনি।ফেরার আগে ৫১ বলে ৩ চারে ৩০ রান করেন মিস্টার কুল।তবে বাংলাদেশ কক্ষপথেই ছিল।মাহমুদউল্লাহ ফিরলে ক্রিজে আসেন সৌম্য।তখন দলীয় রান ছিল ৪০.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৩।এ অবস্থায় দলের রানটা বাড়ানোর দায়িত্ব ছিল তার। তবে ফের ব্যর্থ হন তিনি।ওশানে থমাসের বলে কাট করতে গিয়ে থার্ডম্যানে দেবেন্দ্র বিশুকে ক্যাচ দিয়ে আসেন বাঁহাতি ব্যাটার।
সুখবর মিলেছিল আগেই।স্টেডিয়ামের নিকটবর্তী হাসপাতালে এক্স রে করা হয়েছিল লিটনের।এর রিপোর্ট ছিল পজিটিভ।পায়ে কোনো চিড় ধরা পড়েনি তার।তবে সামান্য ব্যথা ছিল।তা কমলে ফের ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি।কিন্তু শেষদিকে নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেননি লিটন।