মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সামরিক মহড়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে থাইল্যান্ড, আছে যুক্তরাষ্ট্রও

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা-নির্যাতন-ধর্ষণের মতো অভিযোগ থাকার পরও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে বহুজাতিক একটি সামরিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ক্রিস্টোফার লোগান বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সকে বলেন, থাইল্যান্ড তাদের বার্ষিক কোবরা গোল্ড মহড়ার অংশ হিসেবে মিয়ানমারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই মহড়ায় থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের হাজারো সেনা অংশ নেবে।তবে লেফটেন্যান্ট কর্নেল লোগানের ভাষ্য, মহড়ার সামরিক অংশে নয়, মিয়ানমার অংশ নেবে মহড়ার মানবিক সাহায্য ও ত্রাণ তৎপরতাবিষয়ক কাজে অংশ নেবে। রয়েল থাই আর্মড ফোর্সেসের জয়েন্টে ইন্টেলিজেন্সের পরিচালকের কার্যালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, যদিও মিয়ানমার এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে কি না, এটা এখনো পরিষ্কার না, তবে থাইল্যান্ড এ ব্যাপারে আগ্রহী। থাইল্যান্ড চায় মিয়ানমার এতে অংশগ্রহণ করুক।

রাখাইনে সেনাবাহিনীর সহিংসতার পরও কেন থাইল্যান্ড মহড়ায় মিয়ানমারকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী—রয়টার্সের এমন প্রশ্নের জবাবে ওই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ‘সহিংসতা-নির্যাতনের ব্যাপারটি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসেনি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা বিভক্ত। আমরা প্রশিক্ষণ, শিক্ষা, যৌথ সামরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই। আমরা মিয়ানমারকে এখানে যুক্ত করতে আগ্রহী।ওই ঘটনা রাজনৈতিক। আমরা সৈনিক। এটা একটি সামরিক মহড়া’, বলেন সেই সামরিক কর্মকর্তা, যিনি আসলে গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য নিযুক্ত নন।তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে সাড়ে ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম বাস্তুচ্যুত হয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, সেনাসদস্যরা সেখানকার পুরুষদের ধরে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করছে, নারীদের ধর্ষণ করছে আর তাদের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে।জাতিসংঘ এই ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের ধ্রুপদি উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। যদিও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা আসলে রোহিঙ্গা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তাদের লক্ষ্য সেখানকার সাধারণ মানুষ নয়।এর মধ্যেই গত ২১ ডিসেম্বর সহিংসতায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনে মিয়ানমারের প্রভাবশালী জেনারেল মং মং সোয়ের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।

Leave a Reply

More News from আন্তর্জাতিক

More News

Developed by: TechLoge

x