প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বছরপূর্তি, হাজারো নারীর বিক্ষোভ
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের এক বছর পূর্তিতে তার বিরুদ্ধে বিশাল পদযাত্রা করেছে নারীরা।
ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির বিরোধিতা করে এবং আরো নারীদের রাজনৈতিক পদে অধিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নারীদের ক্ষমতায়নের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ ও পদযাত্রা হয়।
‘নির্বাচনের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন’ তাদের পদযাত্রার মূল স্লোগান। এই পদযাত্রাকে নারী রাজনৈতিক কর্মীদের জন্য নতুন যুগের সূচনা হিসেবে অভিহিত করে অংশগ্রহণকারীরা। জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করাও পদযাত্রার আয়োজকদের অন্যতম উদ্দেশ্য। রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে আরো বড় পদযাত্রার পরিকল্পনা করেছে আয়োজকরা।শনিবার ওয়াশিংটন ডিসি থেকে পদযাত্রার খবর জানানোর সময় আলজাজিরার রসিল্যান্ড জর্ডান বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক বছরের শাসনামলে আপনারা যা দেখছেন, বৃহৎ অর্থে তা হলো- নারীদের জন্য কোনো আসন নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজ এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী অনেক নারীরই, বিশেষ করে সব বর্ণের নারীদের লক্ষ্য রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তি বাড়ানো। এর অর্থ এই নয় যে, শুধু ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করা, উপরন্তু বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ থেকে কংগ্রেস পর্যন্ত রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো।’
রসিল্যান্ড জর্ডান পদযাত্রা থেকে আরো বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি হতাশ বা ক্ষুব্ধ, এটি দেখানোই যথেষ্ট নয়। রাজনীতিতে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নারীরা তাদের নীতির প্রতিফলন ঘটাতে চায়।শনিবার ক্লিভিল্যান্ড, ভার্জিনিয়ার রিচমন্ড, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক, টেক্সাসের অস্টিনসহ বেশ কিছু জায়গায় ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ ও পদযাত্রা হয়েছে। ট্রাম্পের অভিষেকের ঠিক এক বছর পূর্তির দিনই বিক্ষোভ করলো নারীরা। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প অভিষিক্ত হওয়ার পরদিন ২১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল।অভিষেকের আগে নারী অধিকার, নারীদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে নারী অধিকারকর্মীরা ফুঁসে উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু স্থানে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছিল। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের অভিষেকের পর তার বিরুদ্ধে এত বড় বিক্ষোভ কখনো হয়নি।
গত বছরের চেয়ে এবার অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কম হলেও বিক্ষোভকারীদের দাবির সঙ্গে এবার জোরালোভাবে যুক্ত হয়েছে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নারী-পুরুষ বেতন বৈষম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইস্যু। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- নারীদের এই পদযাত্রায় অধিকারসচেতন বহু পুরুষও অংশ নিয়েছে।এমন দিনে নারীরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন, যেদিন বাজেট ও অভিবাসন নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মতবিরোধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অচল হয়ে পড়েছে। সরকার পরিচালনার তহবিল ছাড়ে ডেমোক্র্যাটরা বিরোধিতা করায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তরুণ অবৈধ অভিবাসীদের (ড্রিমার প্রকল্প) চুক্তি অনুযায়ী শিক্ষা ও কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য রিপাবলিকানদের ওপর চাপ তৈরি করেছে ডেমোক্র্যাটশিবির। কিন্তু রিপাবলিকানশিবির জিদ করেছে, সরকার পরিচালনার তহবিল ছাড় করার বিলে ভোট না দেওয়া পর্যন্ত অভিবাসীদের নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে কোনো সমঝোতা করবে না তারা।
তথ্যসূত্র : আলজাজিরা অনলাইন