৮মার্চের বিক্ষত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিশ্বনাথের সায়েক আহমদ

ডেইলিইউকেবাংলাডটকম।। আজ সেই আটই মার্চ, ১৯৯৬ সালের এইদিনে বিএনপি নেতা ইালয়াছ আলীর নেতৃত্বে সিলেটের বিশ্বনাথে প্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের মিছিলে গুলি করা হয়। জামাত-বিএনপি জোট সরকারের অন্যতম নেতা এম ইলিয়াছ আলী বিশ্বনাথে আওয়ামীলীগকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করে আওয়ামীলীগের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। ইলিয়াছ আলী জানিয়ে দেয় আওয়ামীলীগ কোন দিনই বিশ্বনাথে রাজনীতি করতে পারবেনা, তার এমন ঘোষনায় বিশ্বনাথের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বিশ্বনাথ সদরে মিছিল বের করলে শুরু হয় বৃষ্টির মতো গুলি, গুলিতে সেদিন আহত হন অনেনেই। সেই দিনের সন্ত্রাসী হামলায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে লন্ডন মহানগর আওয়ামীলীগের মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক সায়েক আহমদকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে সন্ত্রসীরা। জামাত-বিএনপি সন্ত্রাসীদের গুলিতে চিরদিনের মতো সায়েক আহমদের ডানচক্ষুটি নষ্ট হয়ে যায়। তৎকালীন বিরুধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে চিকিৎসার জন্যে পাঠানো হয় ভারতে, তার পর লন্ডনে শত চেষ্টায়ও তিনি তার ডান চোঁখের আলো ফিরে পাননি।
সেইসব ভয়াল দিনের স্মৃতি মনে করে সায়েক আহমদ বলেন, যারা ত্যাগী এবং নির্যাতিত তাদের দলে নেই কোন মূল্যায়ন, দিনে দিনে আওয়ামীলীগে বাড়ছে বহিরাগতদের ভীড় যা দলের সাধারন সম্পাদক আমার নেতা ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় কাউয়া, সায়েক আহমদ দুঃখ করে বলেন কাউয়ারাই আজ আওয়ামীলীগকে দখল করে রেখেছে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ত্যাগীরা। তিনি বলেন এর চেয়ে দুঃখের আর কি আছে যে বিশ্বনাথে তৎকালীন বিএনপি‘র নেতাকর্মীরা ইলিয়াছ আলীর সাথে আমাদের উপর গুলি ছুড়েছিল তারাই এখন বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে, শুধু বিশ্বনাথ নয় এমন অবস্থা দেশের আরো অন্যান্য জায়গায়ও দেখা যায়। তিনি বলেন আমরা পারিবারিক ভাবে জাতির জনকের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি যতদিন বেঁেচ থাকবো ততোদিন বঙ্গববন্ধুর আদর্শের রাজনীতিই করবো। পদ-পদবীর আশায় রাজনীতি করিনা। তবে দুঃখ হয় যখন দেখি দলে বসন্তের কোকিল আর কাউয়াদের অবাদ বিচরন তখন কষ্টপাই।
সায়েক আহমদ বলেন, তার পিতা আব্দুন নূর বঙ্গবন্ধুর সময়ে বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং জাতির জনকের আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন সবসময়ই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করেছেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন, দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগীতা করেছেনে। সায়েক আহমদ এই প্রতিবেদককে আরো বলেন স্কুল জীবন থেকে ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই, ১৯৮৮ সালে সিলেট এমসী কলেজ ছাত্রবাসের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হই, ১৯৯০ সালে সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্মসম্পাদক ও বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করি, পরবর্তিতে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদলাভ করি। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সৈরাচার বিরোধী আন্দোল এবং ভাত ও ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সিলেট ও বিশ্বনাথে মিছিল মির্টংয়ে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করেছি। যখন জামাত-বিএনপি সন্ত্রাসীরা বিশ্বনাথে আমাদের মিছিলে গুলি করে, সেই হামলায় আমার শরীরে ও চুখে গুলির আঘাত লাগে, আমি মধ্যবৃত্ত পরিবারের সন্তান , চিকিৎসার জন্যে আমার বাবার প্রায় ৭একর জমি বিক্রি করতে হয়েছে। দল থেকেও সহায়তা পেয়েছি আমার নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাকে চিকিৎসার জন্যে প্রথমে ভারতে পরবর্তিতে লন্ডনে প্রেরণ করা হয়, দল থেকে আমাকে সহায়তা প্রদান করা হয়। তার পরেও আর শেষ রক্ষা হয়নি চিরদিনের জন্যে হারাতে হয় ডান চক্ষু । যতদিন জীবত থাকবো জাতির জনকের আদর্শের রাজনীতিই করে যাব।

Leave a Reply

Developed by: TechLoge

x