নাহিদ-শিক্ষার উন্নয়নে এক যুগান্তকারী মন্ত্রী
আলী আহমেদ বেবুল ।। পূর্ব সিলেটের শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পঞ্চখণ্ড হরগোবিন্দ মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় স্কুল ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হয়ে পাকিস্তান সরকারের সামরিক শাসনামলে বেআইনি ঘোষিত গোপন ছাত্র আন্দোলন ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন নুরুল ইসলাম নাহিদ। জাতীয় পর্যায়ে ষাটের দশকের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ সালে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন।মহান মুক্তিযুদ্ধসহ ঐ সময়ের সকল আন্দোলন-সংগ্রামে একজন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা এবং সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি ছিলেন প্রথম সারিতে। এ সময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে নাহিদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ হয়।মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে নাহিদ বিরাট ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯১ সালে সিপিবি-র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৩ সালে আওয়ামীলীগে যোগদেন এবং দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ ফোরাম প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য নির্বাচিত হন।নাহিদ সুদীর্ঘ ৬০ বছর ধরে তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে গণ মানুষের অধিকার ও দাবী প্রতিষ্ঠা তথা একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাশীল জাতি গঠনের জন্য নিরলস ভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। সিলেট- ৬ ( গোলাপগঞ্জ -বিয়ানীবাজার ) আসন থেকে ১৯৯৬ সালে প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদে ৮৬ হাজার ৫৮৯ ভোটে বেশী পেয়ে নুরুল ইসলাম নাহিদ দ্বিতীয় বারের মতো সাংসদ নির্বাচিত হন। ( প্রাপ্তভোট: ১,৩৮,৩৫৩ )। আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে শিক্ষামন্ত্রী করেন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নুরুল ইসলাম নাহিদ বিজয়ী হলে পুনরায় শিক্ষামন্ত্রী হন।শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে (২০০৯-২০১৮) শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধনে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর উদ্যোগে প্রথমবারের মত সকল মহলের মতামত নিয়ে সমগ্র জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’ প্রণয়ন ও জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নেতৃত্বে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিগত ১০ বছরে সারাদেশে একই দিনে প্রায় ৩৫ কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দিয়ে একটি দৃশ্যমান দৃষ্টান্ত ও ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। যা দুনিয়ার কোনো দেশে নেই।একজন সফল শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)’র ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।এছাড়া বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি প্রতিনিধিত্বকারী নয়টি দেশের শিক্ষা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীদের ই-নাইন ফোরামের চেয়ারম্যান ।উল্লেখ্য ইউনেস্কোর এডুকেশন ফর অল কর্মসূচির আওতায় গঠিত ‘ই-নাইন ফোরাম’র সদস্য দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ব্রাজিল, চীন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তান।
সিলেট-৬ থেকে নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংসদ নির্বাচিত হয়ে গোলাপগঞ্জ – বিয়ানীবাজার উপজেলাকে জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মান ও মর্যাদাপূর্ণ স্হানে অধিষ্ঠিত করেছেন। এ দু’উপজেলায় আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে শিক্ষা,যোগাযোগ,গ্যাস,বিদ্যুৎ সহ আর্থসামাজিক নানাবিধ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে বিগত ৫০ বছরে কোন সাংসদ করতে পারেননি। উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার এ ধারা অব্যাহত রাখার জন্য মহাজোটের প্রার্থী জননেতা নুরুল ইসলাম নাহিদকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য গোলাপগঞ্জ – বিয়ানীবাজার উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি আকুল আহবান জানাচ্ছি।