সুচি’র পদত্যাগ করা উচিত: জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক,মিয়ানমারঃ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গতবছর ভয়াবহ সামরিক নিধনের ঘটনায় দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির পদত্যাগ করা উচিত ছিল।এ অভিমত প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার জায়েদ রাদ হুসেইন।বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সুচি যেভাবে ব্যর্থ হয়েছেন,তা দুঃখজনক।
সম্প্রতি জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিধনকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে উল্লেখ করে এর সঙ্গে জড়িত সেনা কর্মকর্তাদের বিচরের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র দু’দিন পরই এ মন্তব্য করলেন জাতিসংঘের এই বিদায়ী হাইকমিশনার।যদিও মিয়ানমার জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।বুধবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতে বলেন,আমরা এফএফএম (জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন) প্রতিনিধিদের মিয়ানমারে ঢুকতে দেইনি।তাই মানবাধিকার পরিষদের এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছি। একই সঙ্গে জাতিসংঘের এ সংক্রান্ত কোনো প্রস্তাবকে আমরা মেনে নিতে পারি না।
সোমবার (২৭ আগস্ট) প্রকাশিত জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় সু চির-ও সমালোচনা করা হয়েছে।ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই জায়েদ রাদ হুসেইন বলেন,রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে তিনি (সুচি) ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন।কেননা পদাধিকার বলেই তিনি সেই ক্ষমতা রাখেন।কিন্তু তিনি এ বিষয়ে নীরব রইলেন।কিছু না করতে পারলে,তিনি অন্তত পদত্যাগ করতে পারতেন।জাতিসংঘের মানবাধিকার হা্ইমিশনার আরো বলেন,তার তো বার্মার (মিয়ানমার) সেনাবাহিনীর মুখপাত্র হয়ে থাকার কোনো প্রয়োজন ছিল না।বরং তিনি সোচ্চার হতে পারতেন।
এরপরই সু চিকে কটাক্ষ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, ‘আমি দেশের নামমাত্র নেতা হতে প্রস্তুত, কিন্তু এই অবস্থার অধীনে কিছুতেই নয়।রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় গতবছর আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন সু চি। তখন অনেকেই তার নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়ারও দাবি করেছিলেন। তবে বুধবার নোবেল কমিটি বলেছে, মিয়ারমারের নেত্রীর পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়া হবে না।মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সামরিক শাসকেদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেন সু চি,এজন্য তাকে বহুদিন গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে।যার প্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালে তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়া হয়।গতবছরের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন শুরু করে মিয়ানমার বাহিনী। তখন প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। এসব শরণার্থীদের দেশে ফিরিয়ে নিতে টালবাহানা করছে মিয়ানমার সরকার।
সূত্র: বিবিসি