লন্ডন বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে লিখলেন, আওয়ামীলীগের কাউন্সিল নিয়ে লেখার সাহস আপনাদের মত সাংবাদিকদের নেই–
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী।। ১. সপ্তাহ খানেক আগে বিএনপি যুক্তরাজ্য শাখার কাউন্সিল নিয়ে লিখেছিলাম, তারেক রহমান সাহেবকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। এবং গণতন্ত্রকে ওয়েস্টমিনিস্টারের সামনে আত্মহত্যা করার জন্য বলেছিলাম। এরপর শুরু হলো ফোন আসা। কেন যে এসব লিখেন? কি লাভ হয় তাতে? লন্ডনে আছেন বলে অনেক কিছুই লেখার সাহস করেন, বাংলাদেশে থাকলে আপনাদের মত সাংবাদিকরা মার খেত। ঢাকায় সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে পারে পত্রিকাগুলো? কিছু বলতে পারে টেলিভিশনগুলো? বর্তমান সরকার আপনাদের চামড়া রাখবেনা। আপনারা সাংবাদিকরা কেন যে বাড়াবাড়ি করেন বুঝিনা।
২. ফয়সল চৌধুরী সাহেব কত টাকা খেয়েছেন সরকারের কাছ থেকে? আসলে আপনাদের মত সাংবাদিকদের কারো দাম দুই টাকা, কারো দাম পাঁচ টাকা, এই তো ডিফারেন্স? সাংবাদিকরা যদি দালালি না করতো তাহলে দেশটার অনেক উন্নতি হতো। এই সাংবাদিকরাই বিভিন্ন সময়ে সরকারের দালালি করেছে বলেই সরকার এত আশকারা পেয়েছে। গঠনমুলক সমালোচনা যদি সাংবাদিকরা করতো তাহলে দেশ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে যেত। শালার সাংবাদিক তোমরা যারা দলীয় সাংবাদিক তোমাদেরকে ব্রাশ ফায়ার করে মেরে ফেলা উচিৎ।
৩. তারেক রহমান সাহেবকে চিনেন? তারেক জিয়া সাহেবের নখের সমান হতে পারবেন? সমালোচনা করেন? সামান্য কিছু পেলেই তারেক রহমান সাহেবের পিছনে উঠে পড়ে লেগে যান, জয় মামাকে কিছু বলতে পারবেন? জয় মামাকে কিছু বললে আপনাদের ১২ টা বাজিয়ে দিবে, পারবেন কিছু বলতে? পারবেননা। একটা লোক লন্ডনে চিকিৎসার জন্য পড়ে আছে, কারো সাথেও নেই, পাঁচেও নেই তারপর ও ফাজলামি করেন? কেন করেন? এসব ছাড়েন, ছেড়ে দেশের গণতন্ত্র নিয়ে লিখুন। দেশে তো গণতন্ত্র নেই। চোখে পড়েনা এসব। আসলে শেখ হাসিনা সরকারের তো গল্লা গরম, যার কারণে কিছু বলতেও পারেননা, লিখতেও পারেননা।
৪. ফয়সল চৌধুরী ভাই আপনাকে লেখক হতে বলেছে কে? আপনাকে মিডিয়ায় আসতে কে বলেছে? দেখতে তো আপনাকে মাস্তানের মতই লাগেরে ভাই। মাস্তান হলে আপনি ভালোই করতেন। লেখা জানেননা, পড়া জানেননা, লিখতে শুরু করেন। যা বুঝেন না, যা জানেন, না তা নিয়ে লিখেন কেন? কত ক্লাস পড়েছেন? আপনার তো পড়ালেখার দৌড় বেশী নেই। সাংবাদিকতা করতে হলে প্রচুর পড়াশুনা লাগে। আপনি পড়ালেখা করুন তারপর জেনে বুঝে সাংবাদিকতা করুন, তাতে আপনি উপকৃত হবেন মানুষ উপকৃত হবে, দেশ উপকৃত হবে। জানেননা কোনো—-লেগে গেছেন সাংবাদিকতায়। যত সব আতেলগিরি।
৫. আপনি যে লন্ডন বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে লিখলেন, গণতন্ত্র নিয়ে লিখলেন আপনার মধ্যে গণতন্ত্র কতটুকু আছে? ২০১২ সালে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে ফেইল করে গঠন করে ফেললেন ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব, ২০১৪ সালে দাড়িয়ে গেলেন ইষ্ট লন্ডনের টাওয়ার হ্যমলেটস কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচনে, ভোট পাননি সাড়ে তিনটা, দাড়িয়ে গেলেন লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে, বুঝেন কিছু? জীবনে তো পরাজয় ছাড়া বিজয়ী হতে পারেননি!!!
লন্ডনের আওয়ামলীগ নেতা শাহ শামীম বলেছেন, শোয়েব ভাই আপনাকে বিএনপি পছন্দ করে না, তাহলে আওয়ামীগের সমালোচনা করেন কেন?
প্রিয় পাঠক, এই হচ্ছে মোটামুটি আমার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহের লেখার পর বিএনপি সমর্থিত অনেকের অভিযোগ। আরো কিছু অভিযোগ ছিল সেগুলো লিখলে লেখার কলবর বৃদ্ধি পাবে, তাই আর লিখলামনা। আরেকটি অভিযোগ রয়েছে সেটি হলো টেলিভিশনের মালিকদের বিরুদ্ধে। আমার একার বিরুদ্ধে ছিলনা। সব মালিকের বিরুদ্ধে। টিভি মালিকরা নাকি মহিলাদের পিছনে ঘুর ঘুর করে ইত্যাদি।
প্রথম অভিযোগের জবাব দেই। বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে লিখেছি, আওয়ামীলীগের কাউন্সিল নিয়ে লিখতে সাহসের কি দরকার আছে?? যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের কাউন্সিল যে হয়না গত ৭ বছর সেখানে আমার কি-ই-বা করার আছে? তবে বিএনপি যুক্তরাজ্য কমিটি কাউন্সিল একটা তো করেছে, সেটি লোক দেখানো কাউন্সিল হোক, আর লোক হাসানো কাউন্সিল হোক করেছে তো একটি, আওয়ামীলীগ তো তা-ও করছেনা। এটা ঠিক। এ যুক্তি আমি মানি। কেন আওয়ামিলীগ যুক্তরাজ্য কমিটি কাউন্সিল করেনা সেটি তো তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। দলের সিদ্ধান্তকে তো আমি কিছু করতে পারবোনা। তবে তাদেরকে অনুরোধ করতে পারি যে, ভাই আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ আপনারা একটি কাউন্সিল করুন, কাউন্সিল করে দেখিয়ে দেন বিএনপিকে আপনারা সুষ্ঠ সুন্দর একটি গণতান্ত্রিক কাউন্সিল করতে পারেন। যে কাউন্সিল থেকে হয়তো বা ভবিষ্যতে বিএনপি শিক্ষা নিতে পারে।
আমাকে লেখক হতে কে বলেছে? এটার উত্তর কি লিখবো, কেউ বলেনি, নিজ থেকেই লেখালেখি শুরু করেছি, সেই ১৮/১৯ বছর বয়স থেকেই। আমাকে দেখতে মাস্তানের মত লাগে এটার জন্য কি আমি দািয়? কি করবো? শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে কথা না বলাই ভালো, আল্লাহতালার লীলা খেলা বুঝা বড় দায়, তিনি কাউকে ছোট কাউকে বড় এ রকমই সৃষ্টি করে দুনিয়াতে পাঠান। কেউ হয় লম্বা কেউ হয় খাটো, কেউ বা আমার মত। মিডিয়ায় না আসলেই ভালো করতাম। ব্যবসা করলে হয়তো কিছু টাকা পয়সা বানাতে পারতাম। জীবনের শেষ দিকে এসে নিজে নিজেকেই প্রশ্ন করি কি পেলাম মিডিয়ায় এসে? জীবনের অংক তো মিলছেনা। রাজনীতি করলে হয়তো এমপি মন্ত্রী হতে পারতাম। তারেক রহমান সাহেবের দল করলে, আমিও দেশ নায়ক বলে বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলতাম, আর আওয়ামীলীগ করলে হয়তো বলতে পারতাম ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন স্বচ্ছ হয়েছে, ভালো হয়েছে, দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে হাঁটছে ইত্যাদি। তারেক রহমান সাহেবের নখের সমান হতে পারতাম কি-না জানিনা, তবে নিজেকে এত ছোট মনে করিনা। আমার কোনো কিছু না থাকলেও দুঃখবোধ নেই। তবে এ পৃথিবীর সবচাইতে মূল্যবান যে জিনিসটি রয়েছে সেটি হচ্ছে সততা, আমার মধ্যে সততা আছে, সৎ পথে জীবন পরিচালিত করেছি, কারো টাকা মারিনি, সরকারের অথবা জনগণের টাকা খাইনি, দুর্নীতি করিনি। জীবনকে উপলব্ধি করেছি, মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসার শিক্ষা পেয়েছি। স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জীবন কাটানোর মধ্যে এক রকমের আনন্দ, দেশপ্রেম হৃদয়াঙ্গম করেছি। অবাক দৃষ্টি নিয়ে দেখেছি মানুষের উত্থান, দেশে বিদেশে চোখের সামনে অনেকেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ নয় বটগাছে রুপান্তরিত হয়েছেন, কিন্তু আমি যেখানে ছিলাম সেখানেই পড়ে আছি। তবে গড্ডালিকায় গা ভাসাইনি। মনের আয়নায় অনেকেরই নাম উঠে আসে, কে কি করেছেন এই লন্ডনের বাঙালী সমাজে, এবং দেশের সমাজে! আমি অর্থনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছি বিজয়ী হতে পারিনি, এটার জন্য আমার কোনো দুঃখবোধ নেই কারণ লেখক, সাংবাদিক, কবি, মিডিয়া ব্যাক্তিত্বরা টাকা পয়সার মালিক হতে পারেনা, তাই বলে কি তারা ব্যর্থ? তাই বলে কি তারা পরাজিত? এই লন্ডনে থেকেও আমি আমার সন্তানকে দামি কাপড় দিতে পারিনা, স্ত্রীকে দামি পারফিউম দিতে পারিনা, তাই বলে কি আমি ব্যর্থ? অনেক বিখ্যাত লেখক, সাংবাদিক, কবি জীবনে অর্থ কষ্টে ভুগেছেন, তার মধ্যে সেক্সপিয়ার এর নাম বলা যায় জীবনের প্রথম দিকে তিনি অর্থ কষ্টে ভুগেছেন, উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, নজরুল ইসলাম, সিলভিয়া প্লাথ সহ অনেক চিত্র শিল্পী না খেয়ে মরে গেছেন তারা কি ব্যর্থ? ঢাকার কবি শামসুর রহমান, গণমানুষের কবি দেলোয়ার জীবনের শেষের দিকে অর্থকষ্টে ভুগেছেন তারা কি ব্যর্থ?? বাউল স¤্রাট আব্দুল করিম যিনি কালজয়ী গান রচনা করে গেছেন তিনি কি ব্যর্থ? জীবনের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম হতে পারে, কারো কাছে অর্থ, কারো বিত্ত, কারো কাছে ক্ষমতার দাপট, আমার কাছে হয়তো জীবনের সংজ্ঞা মানেই সততা, আমার কাছে হয়তো জীবনের সংজ্ঞা মানেই মিথ্যা কথা না বলা, আমার কাছে হয়তো জীবনের সংজ্ঞা মানেই মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসা, জীবনের সংজ্ঞা মানেই কাউকে না ঠকানো, তাতে যদি আমি পরাজিত হই, আমার কিছুই যায় আসেনা, আমি পরাজিত হতে হতে নিঃশ্বেস হয়ে যাবো, আমি পরাজিত হতে হতে কবরে চলে যাবো, আমি পরাজিত হবো তবু ও আমি তারেক রহমান সাহেবের রাজনীতির কাছে, জয় মামার রাজনীতির কাছে মাথা নত করবোনা। আমি সে বিচারে যাবোনা তারেক রহমান সাহেবের রাজনীতি জয় মামার রাজনীতি সঠিক না ব্যর্থ, সে বিচার তোমরাই করো, তোমরা যারা তাদের রাজনীতি করো, সমাজ একদিন, ইতিহাস একদিন বিচার করবে, সেদিন হয়তো আমি পরাজিত না হয়ে বিজয়ী হবো, তোমরা এখন জয়ী হও,আমি পরাজিত হই। তাতেই আমি সুখী। এ পরাজয় আমি মেনে নিয়েই আগামীর পথ চলবো, আমার পরবর্তী প্রজন্মকে বলে যাবো, তোমারা যদি তারেক রহমান আর জয় মামার রাজনীতিকে শ্রেষ্ঠ মনে করো তাহলে করো, আর যদি ব্যর্থ মনে করো, তাদের রাজনীতি দেশের জন্য ক্ষতিকর মনে কারো, তাহলে প্রত্যাখান করো, তাতে তোমাদের কি লাভ হবে জানিনা। হয়তোবা সমাজের জন্য ভালো হবে, গণতন্ত্রের মঙ্গল হবে। সমাজ হয়তো একদিন উপকৃত হবে।
লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে কেন দাড়িয়েছিলাম সেটা বুঝার ক্ষমতা যদি এ জনগোষ্ঠির হতো তাহলে দুনিয়া অন্য রকমের হয়ে যেতো। লুৎফুর রহমান টাওয়ার হ্যামলেটসের মানুষের উপর থেকে চলে যাওয়ায়, শুধু ইষ্ট লন্ডনের বৃটিশ বাঙালিরা রক্ষা পায়নি পুরো ইউরোপের বাঙালি মানুষগুলো ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। প্রতিদিন বৃটেনের মেইনষ্ট্রিম পত্রিকাগুলোতে যেভাবে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে সেটি যদি আরো কিছু দিন অব্যাহত থাকতো তাহলে এই লন্ডনে বৃটিশ বাঙালিরা থাকতে পারতো কি-না আমার সন্দেহ। ব্রিটিশ এষ্টাবলিশ্টমেন্ট লন্ডনের বিখ্যাত হ্যারোডস কোম্পানীর আল ফায়িদ সাহেবেকে নাগরিকত্ব দেয়নি, হিন্দুজা ব্রাদ্রাসকে দিয়েছে কি-না আমি জানিনা, হেরোডসের মালিকের ছেলে ডডি আল ফায়িদের অবস্থা কি হলো? আমি লিখবো আপনারা পড়বেন? অনেক কিছুই তো লিখতে পারিনা, বলতে পারিনা———।
সর্বশেষ লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব? বলতে চাইনা, শুধু একটি কথাই বলবো, সর্বশেষ যে নির্বাচন হয়েছে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সেখানে সদস্য সংখ্যা কত? কারা সদস্য হয়েছেন? আমার বন্ধু জনমতের নিউজ এডিটর মুসলেহ উদ্দিন একদিন বলেছিলেন, ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের নির্বাচন আমি কেন দিচ্ছিনা? আমি বলেছিলাম আমি মানুষের মত পদ আকড়ে ধরে থাকতে চাইনা, এটিইউ তাজ রহমান ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব গঠন করে তিনি দেশে চলে গেলেন জাতীয় পার্টি করতে, সেখানে তিনি প্রেসিডিয়ামের সদস্য হলেন, ঢাকায় টক শো করে বেড়ান, বিশিষ্ট সাংবাদিক জনাব কেএম আবু তাহের চৌধুরী সাহেবকে অসংখ্যদিন বলেছি আমাকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি করুন, বেতার বাংলার মালিক নাজিম চৌধুরী সাহেবকে বলেছি, আমি বছরের পর বছর ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি থাকতে চাইনা, আমি সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে চাইনা, আমি সাংবাদিক নয় এমন কাউকে সদস্য বানিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাইনা, আমি প্রেস ক্লাবের সদস্য তাকেই করতে চাই, যে সাংবাদিক। সার্কুলেশন ম্যানেজার থেকে শুরু করে পত্রিকার ডেলিভারীম্যান প্রেস ক্লাবের সদস্য হয় কি করে??? জীবনে এক কলম লিখতে পারেনা, সে বড় সাংবাদিক, জীবনে একটি রিপোর্ট লিখতে পারেনা, সে বড় সম্পাদক, কলাম লিখতে পারেনা, অন্যের লেখা নিজের নামে চালিয়ে দেয়। এ লন্ডনে গত ৩০ বছরে আমার চোখের সামনে অনেকগুলো পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে, অন লাইনের সয়লাব দেশে বিদেশ, রিপোর্টার কয়জন বের হয়েছে? কয়জন কলামিষ্ট সৃষ্টি হয়েছে? লেখক সৃষ্টি করেছেন? কেউ লিখে ফেললে অনেকেই জেলাস হতেন, লেখা ছাপাননি, উল্টো আজে বাজে কথা বলে একজন লেখককে তার লেখক সত্বাকে অংকুরেই বিনষ্ট করেছেন। এ সব কথা বললবো? আপনারা পড়বেন? আমার মিডিয়ায় পরিচয় দেওয়ার আর অবশিষ্ট কিছুই নেই, একজন সাংবাদিক, একজন টিভি ব্যাক্তিত্বের সর্বশেষ যে পদ সেটি আমি অলংকৃত করেছি, আমি বাংলা ভাষার সবচাইতে জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলের ইউরোপের মালিক হিসেবে দশ বছর কাটিয়ে দিয়েছি, তারপর আমার আর চাওয়া পাওয়ার কিছুই থাকতে পারেনা। আমি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি পরিচয় দিয়ে কি আরো একটি বিয়ে করবো? নতুন বিয়ের সময় যে জিজ্ঞাস করা হয় জামাই কি করেন? তখন কি বলা হবে জামাই ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি? আমার এ পর্যন্ত আসতে ৫০ বছর সময় লেগেছে। লন্ডনে টিভি চ্যাানেল চালাতে গিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে, আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে লোনই আছে তিন লক্ষ পাউন্ড। কেউ কেউ তো চায় বিনা টাকায় টিভির মালিক হয়ে যেতে। চ্যানেল আই তো ফেইস বুক টিভি নয়। প্রতি মাসে খরচ আছে ৫০ হাজার পাউন্ড। অনেকে পিছনে সমালোচনা করে জেনে না জেনে, বুঝে না বুঝে সমালোচনা করে। কখনো কাজ করেনি, জীবন ভর বেনিফিট খেয়েছে সে ও কথা বলতে নিজের দিকে জানের দিকে তাকায়না। একজন ব্যাবসায়ি সারা জীবন অর্থ কামিয়েছে, সৎ পথে কামালে তো কোনো কথা নেই, কামিয়েছে অসৎ পথে সে যখন আমার সমালোচনা করে তখন কষ্ট পাই। আমি সারা জীবন মিডিয়ায় সময় কাটিয়ে যদি ব্যর্থ হই, পরাজিত হই, এ সমাজ যদি মনে করে আমি ব্যর্থ পরাজিত, তাহলে শুধু বলবো তুমি জয়ী হও আমি পরাজিত হই, ব্যর্থ হই, ব্যর্থতার দায় নিয়েই আমি বাকি জীবন টেমসের পাড়ে কাটিয়ে দিব। আমি তারেক রহমান সাহেব অথবা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার মত আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন এ দাবী নিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে বলবোনা আমাকে এ পদ দিতে হবে, সেই পদ দিতে হবে। পিতা কি করেছেন সেটা পিতার ব্যাপার। পশ্চিমা বিশ^ সময়ের সিঁড়ি বেয়ে কেন উপরে উঠে গেছে তা যদি আমাদের নেতা নেত্রীরা দেখতেন, বুঝতেন তাহলে এসব করতেননা। একবার সেন্ট্রাল লন্ডনের কাপড়ের শপে এক ছেলেকে কাজ করতে দেখে আমি নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলাম ছেলেটির চেহারা যেন কার সাথে মিলে যাচ্ছে, উপায়ান্তর না দেখে ছেলেকে জিজ্ঞাস করেছিলাম তোমার চোহারার সাথে কার যেন মিল রয়েছে, ছেলেটি বলেছিল আমি জন মেজরের ছেলে , এমনভাবে বলেছিল যে জন মেজন কোনো ব্যাপারই না, প্রিয় পাঠক জন মেজর ছিলেন তখন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী!! বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর ছেলে একটি ষ্টোরে কাজ করে আর আমাদের দেশের নেতা নেত্রীর ছেলে মা বাবার স্বঘোষিত পদে থেকে প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল মেইন্টেইন করে ঘুরে বেড়ায়, আমাদের বাংলাদেশের কোনো প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ঢাকার নিউমার্কেটে অথবা বসুন্ধরা সিটির শপিং মলে কাজ করে এটা কল্পনা করতে পারবেন? কেউ যদি কল্পনা করে অথবা এ রকম বলে তাহলে মার খাওয়ার সম্ভাবনা ১০০ পার্সেন্ট। এটাই বাঙালী জাতির দুর্ভাগ্য।
লেখক : সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব,
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম,
ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ।
(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)