সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নামে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে” একটি হল নির্মান করা হোক,আমরা গর্বিত হবো-

শাহাব উদ্দিন চঞ্চল ।। পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় শ্রী পবিত্র নাথ দাস নিঃসন্তান চাচা HARA GOVINDA দাস এর নিজ ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত করে এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা আপামর জনগনকে আলোর দিশারী করে তুলতে উদার হস্তে বিলিয়ে দিয়েছিলেন নিজেদের সর্বস্ব,গড়ে তুলেছিলেন এই জনপদের হিন্দু মুসলমান সকলের শিক্ষার উন্নয়নে তাঁদের নিজস্ব ভূমিতে শতবর্ষ পূর্বে। যে শিক্ষার আলো জালিয়ে দিতে স্বর্গীয় শ্রী পবিত্র নাথ দাস নিঃসন্তান চাচা হরগোবিন্দ দাসকে স্মরনীয় করে রাখতে যাত্রা শুরু করে ১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন PANCHAKHANDA HARA GOVINDA HIGH SCHOOL.বড় কষ্টের সাথে লিখছি- আমরা জানি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদিয়া জেলার একটি সুপ্রাচীন শহর ছিল নবদ্বীপ সেই সময়ে বিদ্যালাভের পীঠস্থান ও একে বলা হত বাংলার অক্সফোর্ড। আর আমাদের পঞ্চখন্ডকে বলা হয় ক্ষুদে নবদ্বীপ। এই ক্ষুদে নবদ্বীপ কি তার ঐতিয্য হারিয়ে ফেলেছে।
.
সেদিন ১৬ই ডিসেম্বর ২০১৮ রাত,আমার প্রিয় ভাই কবি ওয়ালী মাহমুদকে নিয়ে PHG-HIGH SCHOOL টিলার গ্যালারিতে বসে নিজেদের মত করে বিজয় দিবসের সাংকৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলাম এক পর্য্যায়ে স্কুল টিলা ঘুরতে গিয়ে যখন দেখলাম শত বছরের পুরাতন আমাদের ঐতিয্যবাহী PHG-HIGH SCHOOL এর প্রধান দুটি ভবনের মধ্যে দক্ষিন পাশের ভবনটি নাই তখন কেন জানি মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম,মনে হচ্ছিল চিৎকার দিয়ে কাঁদতে আর জোর গলায় গালি দিতে কে বা কারা এই কাজটি করেছে আমাদের এই antic ভবনটি ভেঙ্গে চুরমার করে দিল? নিশ্চয়ই এটা একটি চক্রান্ত তা না হলে কেমনে এমন একটি ঐতিয্যবাহী ভবন ভেঙ্গে ফেলতে পারলো।পৃথিবীর মানুষ হাজার বছরের ঐতিয্যকে ধরে রাখতে কোটিকোটি টাকা ব্যায় করে আর আমরা তা ধংস করছি ঐতির্য্যকে বিলিন করছি।
.
উত্তর পাশের ভবনের মধ্যে খানের ফিলারের দুই পাশে শুধু HIGH SCHOOL লেখা আছে আর দক্ষিন পাশের ভবনও নাই, নাই HARA GOVINDA দাসের নাম। দক্ষিন পাশের ভবনের ফিলারের দক্ষিন পাশের উপরের ছিল PANCHAKHANDA নীচে HARA আর উত্তরে GOVINDA. ১৯১৭ সাল থেকে দক্ষিন এবং উত্তরের মুল দুই ভবনের টিন সেডের নীচে ইংরেজি Capital letter এ শোভা পাচ্ছিল PANCHAKHANDA HARA GOVINDA HIGH SCHOOL.আজ PANCHAKHANDA নাই HARA GOVINDA দাস নাই আছে শুধু HIGH SCHOOL. আমরা পঞ্চখন্ডের মানুষ কি এতই নীচে নেমে গেলাম যাদের নিজস্ব ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে পড়া লেখা করে শিক্ষিত হয়েছি আজ তাঁর চিহ্ণ মুছে দিচ্ছি আমরা কি তাহলে এই প্রবাদ বাক্যের প্রমানিত হতে চলেছি”-ডালিম পাকিলে পরে নিজে ফেটে যায় ছোট লোক বড় হলে বন্ধুকে কাঁদায়।”
.
আর স্কুল টিলায় থাকতে মন চাইছিলনা,ওয়ালী মাহমুদ বললেন ভাই বঙ্গবন্ধু ভবন দেখে যান- যখন বঙ্গবন্ধু ভবনের অবস্থান নুরুল ইসলাম নাহিদ ভবনের পিছনে দেখলাম তখন মনে হলো এটা নিশ্চয়ই বড় ইতিহাস বিকৃতকারী নাপিতরা তীক্ন বুদ্ধি সম্পন্ন নিমক হারাম জাতের কোন প্রজার কাজ! লে আউট দেখে বুঝার বাকি রইলনা এখানে কৌশলে কি জাতির পিতাকে অবমাননা করা হয়নি? অপমানিত করা হয়েছে পঞ্চখন্ড বিয়ানীবাজারবাসীকে। ছোট করা হয়েছে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদকে।জাতির পিতাকে অবমুল্যায়ন করে যারা এই পঞ্চখন্ডের মানুষকে কলঙ্কিত করছে এরা নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের নয়, বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা জরুরী।
.
পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ নাম মুছে সরকারী অর্থে একই স্থানে নির্মিত নতুন ভবনের নাম নুরুল ইসলাম নাহিদ ভবন করে সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে অবমাননা করা হয়েছে।তিনি নিজেই হয়তো জানেন না যে তাঁর নামে ভবন তৈরি করে শতবর্ষের এই ঐতিয্যবাহী পুরাতন নিদর্শনকে ভেঙ্গে পঞ্চখন্ড বিয়ানীবাজারের এই জনপদের হিন্দূ মুসলমান আপামর জনগনের শিক্ষার উন্নয়নে যে মশাল জালিয়ে পবিত্র নাথ দাস নিঃসন্তান চাচার ভূসম্পতিতে HARA GOVINDA দাসকে স্মরনীয় করে রাখতে যে ভবনটি তৈরি করে রেখে গিয়েছিলেন,সেই অবদানকে আগামী প্রজন্মের কাছে আড়াল করে রাখার হীন প্রচেষ্টা।যারা এই কাজ করেছে এদেরকে চিহ্নিত করে এদের করা এই দালান ভেঙ্গে ফেলে আগের জায়গায় নিয়ে আসার জন্য ঐক্যবন্ধ হয়ে এই সকল বখাটে চাটুকার নেতাদের আসল মতলব জানিয়ে দিন নইলে বিয়ানীবাজারবাসী নিমক হারাম হিসাবে পরিচিত থাকবেন।আমরা চাইনা আমাদের পঞ্চখন্ড বিয়ানীবাজারবাসী যে প্লেইটে খেয়েছি সেই প্লেইট কানা করার অভিশাপ নিতে।
.
এই অঞ্চলের হাজার হাজার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এমন কি আমাদের সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন যাদের প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে তিনি হয়েছেন একজন আলোকিত মানুষ, হয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী সেই প্রতিষ্ঠানে নাম মুছে ফেলতে পবিত্র নাথের প্রতিষ্ঠিত ভবন ভেঙ্গে ফেলে সরকারী অর্থে একই স্থানে নির্মিত নতুন ভবনের নাম নুরুল ইসলাম নাহিদ ভবন করে সমগ্র পঞ্চখন্ড বিয়ানীবাজারের অপামর জনসাধারনকে অকৃতজ্ঞ হিসাবে পরিচিত করা হয়েছে।সাবেক সফল শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং পঞ্চখন্ডের বিবেকবানদের উচিত যে স্কুল থেকে জনাব নাহিদ লেখাপড়া করেছিলেন তিনি নিজেসহ সবাই অবগত এই স্কুল যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তিনি জন্ম নেননি,এমনকি তাঁর পরিবারের কোন ভূমি দাতা ছিলেন না সুতরাং কেন HARA GOVINDA দাসের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের নাম কেটে তাঁকে ছোট করা হলো? বিষয়টি তদন্ত করে নতুন করে পুরাতন আদলের ভবন তৈরি করা হোক।
.
নুরুল ইসলাম নাহিদের নামে যদি একান্ত কিছু করতে হয় তাতে কারো আপত্তি নাই কিন্তু এমন অকৃতজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে এবং পুরাতন ঐতিয্যবাহী নিদর্শনকে ভেঙ্গে নিঃসন্তান হরগোবিন্দ দাসের ভাতিজা চাচাকে স্মরনীয় করে রাখতে তারই ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের ছাত্রের নামে নুরুল ইসলাম নাহিদ ভবন করার কি কারন হতে পারে? এটাকি হরগোবিন্দ দাসকে মুছে ফেলার চক্রান্ত না সুবিধাবাদিরা সাবেক সফল শিক্ষামন্ত্রীকে খুশি করতে সুবিধা আদায়ের কারন? শতবর্ষের পুরাতন ভবনকে মেরামত করে এরই পাশে প্রচুর পরিমান জমি থাকা সত্ত্বেও কেন এমন হীনমন্যতা! তাছাড়া নুরুল ইসলাম নাহিদতো আর দাতা নন তিনি ছিলেন সরকারের মন্ত্রী, একজন সফল মন্ত্রী হিসাবে সারা দেশে যে কাজ করেছেন তার নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল নির্মান করা হোক, আমরা গর্বিত হবো।নিঃসন্তান হরগোবিন্দ দাসের নিজস্ব ভুমিতে নির্মিত P.H.G HIGH SCHOOL থেকে HARA GOVINDA দাসের নাম কেটে নুরুল ইসলাম নাহিদের নামে এ ভবন এখানে মানায় না।
.
পরিশেষ আমার প্রিয় কবি মাসুক ইবনে আনিসের একটি কমেন্ট দিয়ে আজকের মত শেষ করছি-শর্টকাটে চলা মানুষগুলো দেখতে একটু হাবা প্রকৃতির হলেও মতলব হাসিলে কামিয়াব। আর তাঁর সঙ্গী সাথীর তালিকায় সব সময় মূর্খরা, অপন্ডিতরা প্রধান্য পায়। সে সিংহের শাবক হতে চায় না, চায় শেয়ালের ভাগিনা হতে। তাঁর পাশের ধূর্ত এবং চালাক শয়তান দিয়ে তার শুভ কাজ উদ্ধার করিয়ে নেয় কৌশলে। তবে কথা আছে ! এগুলো খুবই গৌণ প্রাপ্তি, যা সে অর্জন করে মনেকরে আমি কী হনুরে! আসলে সে যে শর্টকাট পথে এগুচ্ছে সবই তা বুঝে ও জানে শুধু বলে না। কানা ও বধিরদের সমাবেশে বোবাই প্রধান বক্তা হলে সেখানে উপকার ও অপকার আর ধর্তব্য বিষয় হিসেবে গণ্য হয় না।

শাহাব উদ্দিন চঞ্চল। লেখক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ( মতামত লেখকের নিজস্ব)।

Leave a Reply

Developed by: TechLoge

x