বৃটেনে ব্লাক রয়েল উয়েডিং, আমারই ঘর ভাঙ্গিল যে আমি বাধিব তার ঘর, আপন করিয়া খুজিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর——।

রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী।। পৃথিবী জুড়ে একই কথা আলোচনা হচ্ছে বৃটেনে প্রিন্স হ্যারি ও আমেরিকান নায়িকা মেগানের বিয়ে। ১৯ মে ২০১৮ পৃথিবীর ইতিহাসে হয়তো লেখা থাকবে ম্যারেজ অব দ্য সেঞ্চুরী। দিনটি ছিল রোদ্রজ্জল। শনিবার লন্ডনে ছুটির দিন, কিন্তু রোজা রমজানের দিনে এসব বিয়ে শাদীর অনুষ্টান টিভিতে দেখতে ভালো লাগেনা। তারপরও দেখতে হলো, টিভি অন করে বসে আছি স্কাই ৫০১। চ্যানেল আই ইউকের নাম্বার পরিবর্তন হয়েছে এখন স্কাই ৭৫২ নাম্বারে চ্যানেল আই ইউরোপ দেখা যায়। আমি মাঝে মধ্যে ৫০১ টিপতে গিয়ে ৭৫২ চেপে বসি। সে যাক, স্কাই টিভির প্রেজেন্টার এক সময় বললেন রয়েল উয়েডিং শুরু হচ্ছে, বড় ভাই প্রিন্স উয়িলামের সাথে বর আসলেন লন্ডনের বার্কশায়ারের উয়িন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে। মনোরম পরিবেশ। বার্কশায়ারের উয়িন্ডসর ক্যসল আমার কাছে ভালোই লাগে, এক সময় যাওয়া আসা ছিল, প্রচুর সময় কাটিয়েছি গার্লফ্রেন্ডদের সাথে। বয়স যখন কম ছিল, তখন যেতে হতো। প্রেমের টানে, প্রেমিকা যখন বলতো চলো আজ বাকিংহাম শায়ার যাবো, উয়িন্ডসর ক্যাসল ঘুরে আসি। চলে যেতাম। সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলো। মানুষ প্রেমে পড়লে কত কিছুই না করে। অবশ্য বয়স কম হলে শরীরে এনার্জি থাকে প্রচুর। লং ড্রাইভ করতেও ভালো লাগতো। তা ছাড়া লন্ডন থেকে খুব একটা দুরেও না, ২০/৩০ মাইলের পথ। সেই উয়িন্ডসরে যাওয়া আমাকে ছাড়তে হলো কারন বিয়ের পর আর প্রেম করা যায়না, আমার জীবনে বিয়ের পর বিয়ের আগে অসংখ্য প্রেম এসেছে এখনোও আসে, তবে এখন আর ইচ্ছে থাকলেও প্রেম করতে পারিনা। মান সম্মানের ব্যাপার। তা ছাড়া ঐ এলাকায় এখন প্রচুর বৃটিশ বাংলাদেশীদের বসবাস। কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে বলে দিবে সব কিছু। প্রেমের ইতি ঠানতে হলো বার্কশায়ারের উয়িন্ডসরে। দীর্ঘদিন পর টিভির পর্দায় উয়িন্ডসর দেখছিলাম। চেনা জানা শহর। হাজার হাজার মানুষ। কেউ কেউ চলে গেছে আগের দিন রাতে। খোলা মাঠে চেয়ার নিয়ে বসে আছে। এ রকম কিছু পাগল ছাগল এ পৃথিবীতে আছে। ডায়না মারা যাওয়ার পর হাজার হাজার মানুষ বাকিংহাম প্যালেসের সামনে দিনের পর দিন জড়ো হয়ে বসে থাকতো। আমার বিরক্ত লাগতো, কারন আমি প্রায়ই ওদিকে গাড়ী চালিয়ে যেতাম। এখনো বিরক্ত লাগে, লন্ডনে প্রতিদিন হাউস অব পার্লামেন্টের সামনে কোনো না কোনো দেশের মিছিল মিটিং চলে। তাতে কার লাভ হয় জানিনা, তবে লন্ডনে যারা বসবাস করেন ,গাড়ী যারা চালান তারা বিনা কারনে ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে বসে থাকতে হয়। সে যাক, উয়িন্ডসরের আমার প্রেমিকাদের কাহিনী আরেকদিন লিখবো।

আজ লিখি প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের বিয়ের কথা।

মেগানকে আমি প্রথম জেনেছি তার ছোটবেলার সময়। প্রিয় পাঠক আপনাদের মনে আছে কি-না জানিনা, মেগানের বয়স যখন ৮/৯ সম্ভবত ১৯৯৩/৯৪ তখন তিনি আলোচনায় উঠে এসেছিলেন, টেলিভিশনে ওয়াশিং পাউডারের বিজ্ঞাপন নিয়ে একটি চিঠি তিনি লিখেছিলেন কতৃপক্ষের কাছে, এবং হিলারি ক্লিনটনের কাছে। স্মৃতি যদি আমার সাথে প্রতারনা না করে তাহলে চিঠিটি ছিল এ রকম তিনি লিখেছিলেন ওয়াশিং পাউডার শুধু মহিলারা ব্যবহার করবেন কেন পুরুষরা করতে পারেননা? তার মূল বক্তব্য ছিল মা-রা কেন ওয়াশিং পাউডার ব্যবহার করবে মা-রা কেন কিচেনে সব কিছু করবে? এটি শুধু মহিলা বা মা না বলে পিপুল করার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন এবং কর্তপক্ষ তখন মেগানের কথা শুনে মা থেকে সেটি পিপুল করেছিলেন । সেই থেকে মেগান আলোচনায় চলে আসেন। তবে তিনি নাম করেছেন তার স্যুটস টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে। এর পর দির্ঘদিন অতিবাহিত হলেও মেগানের কোনো খোজ খবর আমি পত্রিকা অথবা টেলিভিশনে খেয়াল করিনি। ইতিমধ্যে মেগান হলিউডের নামকরা নায়িকা হয়েছেন বিয়ে করেছেন ডিভোর্স হয়েছে। এসব কিছুই আমার জানা ছিলনা। দীর্ঘ বিরতির পর মেগান আর্ন্তজাতিকভাবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন প্রিন্স হ্যারির সাঙ্গে প্রেম করে। আসলে প্রেম বিয়ে মানুষকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়। চেনা নেই জানা নেই একটি লোকের সাথে পরিচয় প্রেম বিয়ে, আমার কাছে খুবই অদ্ভুদ মনে হয়। মেয়েরা মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে অথবা মানিয়ে নেয়। কিন্তু পুরুষদের কষ্ট হয়। শশুরকে আব্বা ডাকো শাশুরীকে আম্মা এ কেমন যেন লাগে। ডিভোর্সী মহিলারা যখন দ্বিতীয় বিয়ে করে তখন প্রথম পক্ষের সন্তান থাকলে কাকা বাবা যে রকম ডাকতে হয় আমার কাছে ব্যাপারটি সে রকম লাগে।

সে যাক যে কটি বিষয় প্রিন্স হ্যারিও মেগানের বিয়েতে আমাকে অবাক করেছে তার মধ্যে সব কিছু বিনা বাধায় রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মেনে নেয়া। তাহলে কি বৃটেনের রয়েল ফ্যমেলী তাদের ট্রাডিশন থেকে সরে আসছে? সব কিছু যখন আজ মেনে নিচ্ছেন শর্তহীনভাবে তাহলে ১৯৯৭ সালে ডায়না দোদির প্রেমকে মেনে নেয়নি কেন বৃটেনের রয়েল ফ্যমালী? কেন অন্তসত্বা ডায়নাকে এবং দোদি আল ফায়াদকে প্যারিসে জীবন দিয়ে প্রমান করতে হয়েছিল বামন হয়ে চাঁদের দিকে হাত বাড়ানো নিষিদ্ধ“!! প্রিন্স চার্লস তার প্রেমকে প্রতিষ্টিত করার জন্য দু সন্তানের জননীকে কি সেদিন প্যারিসে—–করেছিলেন? যদিও বলা হয়ে থাকে ১৯৯৭ সালের ৩১ শে আগষ্ট প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় দুজনই প্রান হারান। ডায়নার মৃত্যুর পর শোক প্রকাশ করার জন্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ এক সপ্তাহ জাতীয় পতাকা উঠাননি। পরে পাবলিকের অব্যাহত চাপের মুখে বাধ্য হয়ে পতাকা অর্ধনির্মিত করেছিলেন। তা ছাড়া ডায়না সম্পর্কে শশুর পিলিফ আজে বাজে মন্তব্য করেছিলেন——–।

অবশ্য ফিলিপ এর আগেও অনেক আজে বাজে মন্তব্য করেছেন। তার সমালোচকরা বলেন তিনি নাকি অপ্রিয় সত্য কথা বলেন। বেশ কয়েক বছর আগে চায়নায় গিয়েছিলেন রানীর স্বামী ফিলিপ সেখানে বৃটিশদের এক ঘরোয়া অনুষ্টনে জিজ্ঞাস করেছিলেন তোমরা কতদিন থেকে চীনে বসবাস করো? কেউ বলছে ৫ বছর কেউ বলেছে ৪ বছর এ রকম, ফিলিপ বলে উঠেন বেশীদিন চীনে থাকবেনা থাকলে তোমাদের নাক চীনাদের মত চেপ্টা হয়ে যাবে। পরবর্তীতে রানীকে ফিলিপের এ কথার কারনে এপলজি দিতে হয়েছিল। শুধু তা না ইংলেন্ডের লেস্টার শহরে এক ফ্যক্টরী পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখেন ইলিকট্রিকের তার ছিড়ে আসছে তিনি তখন মন্তব্য করেছিলেন এটা কি কোনো ইন্ডিয়ান ফ্যাক্টরী? তার অতিকথনের কারনে পরবর্তীতে রানী তাকে অনেকটা গৃহবন্দী করে রেখেছিলেন। তাকে কোথাও রাষ্টীয় সফরে নিযে যেতে রানী স্বাচ্চন্দবোধ করতেননা। প্রিয় পাঠক হ্যারির বিয়ের দিন আমি অবাক বিস্ময়ে শুনেছি সেন্ট জর্জেস চার্চ্চে আমেরিকান বিশপস মাইকেল কারীর বক্তব্য তিনি যখন এড্রেস করেছিলেন ব্রাদারস এন্ড সিস্টার, তখন গোটা পৃথিবী অবাক হয়েছে। আমাদের কোনো অনুষ্টানে যদি প্রধানমন্ত্রী রাষ্টপতি উপস্থিত থাকেন তাহলে সারাক্ষন মাননীয় আর মহামান্য বলতে হয়। কিন্তু বেটা বিশপস রানী বসা রানীর স্বামী বসা, একবারও সে বলেনি হার ম্যাজেস্ট্রি দ্য কুইন অথবা বলেনি ইয়োর এক্সেলেন্সি!! বিশপস কারী যে ভালোবাসার কথা পৃথিবীকে শুনালেন তিনি কি ভালোবাসা দিয়ে সব কিছু জয় করার কথা বলেছেন? তিনি সারাক্ষন আমেরিকার কালো মানুষের নেতা মার্টিন লুথার কিং এর উদাহারন দিয়েছেন। কারীর বক্তব্যটি ছিল ফাটাফাটি। লাভ ইজ পাওয়ার পাওয়ার ইজ লাভ। লাভ ইজ এভরিথিং।কিন্তু আমাদের বৃটিশ বাংলাদেশী সমাজে দিন দিন লাভ রেসপেক্ট এসব উঠে যাচ্ছে, ভালোবাসা এখন ফেসবুক কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। স্বামী স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে , স্ত্রী স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, কিন্তু কেন? আমি অনেক ঘটনার কথা জানি, ন্ত্রী কোনো কাজ করেনা বসে বসে খায় আর সারাক্ষন আজে বাজে গালাগালি করে। দেশ থেকে বিয়ে করে যারা বউ আনেন তারাও পড়েন বিপদে। অনেক কিছুই বুঝেনা, না বুঝে একটু ঝগড়া হলে পুলিশ ডেকে বসে। পুলিশ আসলে ডোমস্টিক ভায়েলেন্সের কথা বলে স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিয়ে ভেঙ্গে যায়। ছেলে মেয়েদেরকে সোসেল সার্ভিস নিয়ে যায় এ রকম হাজারো ঘটনা এ সমাজে ঘটছে। প্রিয় পাঠক বিশপস কারীর বক্তব্য সবাইকে অবাক করেছে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। অনেকেই বলেছেন বিয়ের অনুষ্টানে যা হয়েছে সব কিছু রানীর অনুমোদন নিতে হয়েছে. কিন্তু বিশপস যে বক্তব্য রেখেছেন সেটি তো লিখিত ছিলনা। আমাদের বেশ কিছু পন্ডিত আছেন এ সমাজে তারা বলছেন প্রিন্স হ্যারির বিয়ে নাকি কালো মানুষের বিজয়! একটি কথা আছে না, “গাছে বেল পাকিলে কাকের কি“? মেগানের বিয়ে হয়েছে প্রিন্স হ্যারির সাথে, মেগান হলিউডের নায়িকা। যারা টেলিভিশন দেখেছেন তারা কি লক্ষ্য করেছেন মেগানের মা ছিলেন কম্পিলিটলি লস্ট। এ রাজকীয় আয়োজনের সাথে মেগানের মা ডোরিয়াকে মনে হয়েছে সম্পূর্ণ বেমানান। তবে প্রিন্স চার্লস মেগানের শশুর মেগানের মা-র অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে হাত ধরে নিয়ে গেছেন, এ হাত ধরা তো রাজ পরিবারের নিয়ম নয়। তবে চার্লস তার উদারতার পরিচয় দিয়েছেন।

প্রিয় পাঠক আপনাদের মনে আছে কি-না জানিনা, ডায়না যখন রাজপরিবারে বিয়ে হয়ে এসেছিলেন তখন তিনি রাজপরিবারের অনেক নিয়ম কানুন বুঝতেন কিন্তু মানতেননা। তার সমস্যা হয়েছিল রাজ পরিবারের সাথে খাপ খাওয়াতে। এদিক থেকে মেগানের অবশ্য সমস্যা হওয়ার কথা না। কারন যদিও মেগান হলিউডের নামকরা নায়িকা তারপরও কথা থেকে যায়। মেগানের ব্রুকেন পরিবার। মা ডিভোর্সী, বাবার সেকেন্ড ম্যারেজ। মেগানের বাবা কেন অনুপস্থিত ছিলেন বিয়েতে? যদিও বলা হয়েছে তিনি অসুস্থ এবং তিনি পাপারাজীদের সাথে একটা অবৈধ কাজ কারবারে লিপ্ত ছিলেন যার কারনে রয়েল ফ্যমেলী তাকে আমন্ত্রন জানায়নি। তারপরও ভিডিও কনফারেন্সে তিনি জয়েন করতে পারতেন। কারন ছেলে মেয়ের বিয়ের দিন মা থেকে বাবার রোলটাই বেশী থাকে। আমার এক পরিচিতজনের বিয়ের দিন তার বাবা অনুপস্থিত ছিলেন। কে একজন জিজ্ঞাস করে বাবা কোথায়? বলা হলো তিনি আসেননি। বিয়ের আসর থেকে একজন মুরুব্বী বললেন যাও বাবাকে নিয়ে আসো। তাদের ছিল ব্রুকেন পরিবার, ছেলে তার বাবাকে বলেনি সে যে বিয়ে করছে। আমাকে বলা হয়েছিল তাকে নিয়ে আসতে, আমি যাইনি কারন আমি জানতাম তার বাবা অনেক গরম মানুষ। পরবর্তীতে তার ছোট বোনের স্বামীকে পাঠানো হয়েছিল, ছোট বোনের স্বামী গিয়ে বলেছিল বাবা, ভাইয়ার তো আজ বিয়ে আপনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছে, ভদ্রলোক বলেছিলেন আমার ছেলের বিয়ে আমি জানিনা তুমি জানো? তুমি যখন জানো তাহলে বিয়ে রেজিষ্টারীর সময় যে ফরম পুরন করা হয় সেখানে বাবার নামের কলামে তোমার নাম বসিয়ে দিও।

সে যাক, মেগানের বিয়ে নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। রাজপরিবার আমাদের কাছে রোল মোডেল। রাজপরিবারের অনেক নিয়ম কানুন রয়েছে যা তাদেরকে মানতে হয়। কিন্তু ইদানিং বৃটিশ রাজ পরিবারে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছেনা। অবশ্য নিয়ম ভেঙ্গেছেন প্রিন্স হ্যারির বাবা প্রিন্স চার্লস। তিনি ডিভোর্সী মহিলা কামিলাকে বিয়ে করে পথ দেখিয়েছেন, আজ তার ছেলেও ডিভোর্সী মহিলা বিয়ে করেছে। অবশ্য ডিভোর্সী মুহিলা বিয়ে করার জন্য আইন প্রণয়ন করতে হয়েছে, এক সময় রানীর চাচা অস্টম এডওয়ার্ড আমেরিকান ডিভোর্সী মহিলাকে বিয়ে করতে গিয়ে সিংহাসন ত্যগ করেছিলেন। তিনি বিয়ে করতে পারেননি, রাজ্য ত্যগ করে ডিভোর্সী মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। অবশ্য এ ক্ষেত্রে হ্যারিকে কোনো কষ্ট করতে হয়নি। ডায়নার মৃত্যুর পর প্রিন্স চার্লস কামিলাকে বিয়ে করার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠেন। প্রিন্স চার্লসের মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ কোনোভাবেই মানছিলেননা এ বিয়ে। কারন তিনি পছন্দ করে ডায়নাকে বিয়ে দিয়েছিলেন তার ছেলের সাথে। শেষ পর্যন্ত চার্লস বিয়ে করেন কামিলাকে। রানী চার্লস ক্যামিলার বিয়ের দিন তার স্বামীকে বলেছিলেন চলো আমরা রিয়েল হর্স রেইস আসল ঘোড়ার দৌড় দেখতে যাই।

প্রিয় পাঠক আপনারা কি বুঝতে পারছেন তিনি কি বলতে চেয়েছেন আপনারা লক্ষ্য করেছেন কামিলার মুখ দেখতে কি রকম?

অনেকেই বলছেন রাজপরিবার অনেক লিবারেল হয়েছে। তারা কালো আর সাদাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ রাখতে চাচ্ছেনা। আমি জানিনা এটা কতটুকু সত্য তবে সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ভেদাভেদ ছিল আছে এবং থাকবে। রাজপরিবারে নিয়মনীতি থাকবেনা তা তো হয়না। তবে প্রেম এবং ভালোবাসা অনেক কিছুই মানেনা। প্রেমের জন্য ভালোবাসার জন্য রাজা সিংহাসন ছেড়ে চলে যায়। তাহলে মাইকেল কারী যে ভালোবাসার উপর জোড় দিয়েছেন সেটিই সত্যি? মেগান এর আগেও বিয়ে করেছিলেন তবে তার কোনো ছেলে মেয়ে হয়নি। ছেলে মেয়ে পাওয়া ও আরেকটি ভাগ্যের ব্যাপার। আমার কাছে সব কিছুকেই উপরওয়ালার রহস্য মনে হয়। প্রিন্স হ্যারি বলেছেন তিনি শীঘ্রই বাবা হতে চান, তবে কি মেগান প্রেগনেট? মেগানের বডি সেইভ আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি অন্তসত্বা। জানিনা আল্লাহ জানেন আর জানেন হ্যারি ও মেগান। যদি তাই হয় তাহলে অগ্রিম অভিনন্দন হ্যারি ও মেগানের প্রতি।

প্রিয় পাঠক বৃটেনের রাজ পরিবার কি এখন সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে? আধুনিকতাকে কি সবাই মেনে নিচ্ছেন? এই প্রথমবার বৃটেনের যুব সমাজ কোনো রয়েল ফ্যামেলির বিয়েতে সম্পৃক্ত হলো। এটাকে অনেকেই শুভ লক্ষন হিসেবে দেখছেন। তবে মেগানের মা ডোরিয়া যেমন বিয়ের অনুষ্টানে লস্ট ছিলেন ঠিক তেমনি ক্যামিলাও লস্ট ছিলেন। কারন যে জায়গায় বসে ক্যামিলা বিয়ের অনুষ্টান উপভোগ করেছেন সেখানে তো থাকার কথা ছিল ডায়নাকে। ডায়নার হাত ধরে আজ চার্লসের বসার কথা ছিল বিয়ের পার্টিতে। কিন্তু দুভাগ্য বসতে হয়েছে ক্যামলিার সাথে। প্রিন্স হ্যারি অথবা উয়লিয়াম কি একবারের জন্য তাদের মাকে মিস করেনি? ক্যামিলা চার্লসের অবস্থা দেখে ডায়নার আত্মা কি বলে উঠেছে

আমারই ঘর ভাঙ্গিল যে আমি বাধিব তার ঘর আপন করিয়া খুজয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর

বিঃ দ্রঃ তবে ক্যামিলার একটা গুন রয়েছে তার মধ্যে খাই খাই ভাব নেই। আমাদের বাঙালী সমাজে যেমন কিছু মহিলাদের মধ্যে খাই খাই ভাব রয়েছে সেটি নেই ক্যামিলার মধ্যে। ক্যামিলা রানী হতে পারবেন কি-না তা নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই, তার কোনো ডিমান্ড নেই। এ জন্যই ক্যামিলা মানিয়ে নিচ্ছেন সব কিছু।

লেখক : সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব,সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ।

(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)

Leave a Reply

More News from মতামত

More News

Developed by: TechLoge

x