৬ লেন ফ্লাইওভার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্কঃ ফেনীর মহিপালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হল দেশের প্রথম ছয় লেইনের ফ্লাইওভার। বৃহস্পতিবার ঢাকায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহিপালের যানজট ছিল বিরাট সমস্যা। এখানকার যানজট দূর করার জন্যই ফ্লাইওভারটা করা।”
৬৬০ মিটার দীর্ঘ ও ২৪ দশমিক ৬২ মিটার প্রশস্ত এই ফ্লাইওভার চালু হওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও ফেনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের ‘সুদিন এসে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “খুব সহজে আপনারা যেতে পারবেন এবং দুর্ঘটনাও কমে যাবে। কারণ এ জায়গাটাতে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটত। সেনাবাহিনীর নির্মাণ ৩৪ কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেড মহিপাল ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ করেছে। ব্যয় হয়েছে ১৮১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়া এ প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের জুন মাসে। তবে প্রায় ছয় মাস আগেই কাজ শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ‘বিশেষভাবে ধন্যবাদ’ দেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, “ফ্লাইওভারটি চালু হওয়ায় যোগাযোগ দ্রুত হবে, ব্যবসা-বানিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি।
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “এই মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করে দিয়েছি। সেই যাতায়াতের পথে যেন কোনোরকম বাধা না আসে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে গাড়ির সংখ্যা ও মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। পাশাপাশি যানজটও বাড়ছে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানুষের যাত্রাপথ কীভাবে সহজ করা যায়, সেই চেষ্টা সরকার করে যাচ্ছে। মহাসড়ক গতিশীল রাখতে স্বল্প দূরত্বের যানবাহনের জন্য হাইওয়ের পাশ দিয়ে পৃথক সড়ক করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ যাতে দক্ষিণ এশিয়ায় ‘উন্নত-সম্মৃদ্ধ দেশ’ হিসেবে গড়ে ওঠে- সে লক্ষ্য নিয়েই সরকার কাজ করে যাচ্ছে।উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতাও কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন থেকে একই অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণপরিবহনের জন্য সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতি ‘র্যাপিড পাস’ এরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এর আগে তাদের মতিঝিল-উত্তরা-আবদুল্লাহপুর রুটের বাসে পরীক্ষামূলকভাবে র্যাপিড পাস চালু করেছিল। বৃহস্পতিবার তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল।
র্যাপিড পাস ব্যবহারকারীকে আর টিকেট কেনার জন্য নগদ অর্থ বহন করতে হবে না। পাস ব্যবহার করেই তিনি যাতায়াত করতে পারবেন। আর পরিবহন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের টিকেট বিক্রির ঝামেলাও কমে আসবে।
সব পরিবহনে একই কার্ড (র্যাপিড পাস) ব্যবহারের সুযোগ দিতে একটি ‘ক্লিয়ারিং হাউজ ব্যাংক’ থাকবে। এই ‘ক্লিয়ারিং হাউজ’ একাধিক পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভাড়া আদায়ের সমন্বয় করবে, পাশাপাশি ভাড়া বণ্টন ও কার্ড ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো দেখভাল করবে।
ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থা সমন্বিত ই-টিকেটিং পদ্ধতির আওতায় আনতে জাইকার কারিগরি সহায়তায় চালু এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ৩৯ দশমিক শূন্য ৬ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলম এটা তারই ‘একটি নমুনা’।আমি খুবই আনন্দিত যে, আধুনিক পদ্ধতি মানুষ ব্যবহার করবে। আমিতো এটাই চাই, আপনাদের জীবন সুন্দর হোক, স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারেন।”
সেবাদাতাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মানুষ যে আকাঙ্খা নিয়ে এই র্যাপিড পাসটা নেবে, তারা যেন যথাযথভাবে সেবা পায় এবং সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে। একই অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সেন মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ‘নোয়াখালী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পেরর উদ্বোধন করেন।
মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় গণভবনের এই অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক উপস্থিত ছিলেন।
More News from বাংলাদেশ
-
খুলনায় মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হত্যা, ৩ আসামী গ্রেফতার,আসামীদের সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন
-
গোলাপগঞ্জে আব্দুল মতিন ও ছায়া খাতুন ট্রাস্টের পক্ষে পিপিই প্রদান (ভিডিও সহ)