কৃষি জমি বাঁচিয়ে কারখানা করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্কঃ শিল্পের প্রসার, রপ্তানি খাত সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেসরকারি খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি বেসরকারি খাত। এসব কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বেপজা’র উদ্যোগে ‘বেপজা ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টরস্ সামিট ২০১৮’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন ।তিনি বলেন, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) দেশের ইপিজেডগুলোকে ইতোমধ্যে বিনিয়োগের আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে দেশ-বিদেশে সুপরিচিত করেছে। সরকার এ ক্ষেত্রে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের পাশাপাশি শিল্প-উৎপাদনের দিকে নজর দেন। তিনি পরিত্যাক্ত কলকারখানাগুলো জাতীয়করণ করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালে বঙ্গবন্ধু সরকারের সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৭ ভাগের উপরে উঠেছিলো। কিন্তু জাতির পিতাকে হত্যার পর ৭৫-পরবর্তী সরকারগুলো সেসব কলকারখানা পানির দামে বিক্রি করে দেয়। তারা মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যস্ত ছিল।

বাংলাদেশে কৃষি জমি বাঁচিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কলকারখানা গড়ে তুলতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশে যেসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি সেখানে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। ফলে আমাদের দেশেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে।তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের মিরেরসরাইয়ে বেপজার এক হাজার ১৫০ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন করেছি আজ। তাছাড়া যারা যেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল করতে জমি চাচ্ছেন, আমরা জমি দিয়ে দিচ্ছি। মিরেরসরাইয়ের ওই অর্থনৈতিক অঞ্চল চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে হওয়ায় পণ্য রফতানিতে বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া ঢাকার সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীরা বিশ্বের মধ্যে সস্তায় দক্ষ জনবল পাচ্ছেন। বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি জন্য আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। যার মধ্যে- ঢাকায় মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু ইত্যাদি অন্যতম। যা সারাদেশে অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় দেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। ইতোমধ্যে আমরা ১৬ হাজার ৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। দেশে ৪৫ লাখ সোলার প্যানেল উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া ভারত থেকে ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করেছি। আর ভারত ও নেপাল থেকে আরও দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন সোলার প্যানেলসহ ৯০ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছেন। যেহেতু বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। তাই বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়বে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াচ্ছি।শেখ হাসিনা বলেন, ‘নতুন নতুন পণ্য রফতানির জন্য বিশেষ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। তাছাড়া কোন দেশে কোন পণ্যের চাহিদা আছে তার খোঁজ খবর নিচ্ছি।তিনি আরও বলেন, ‘নেপাল-ভারত-ভুটান-বাংলাদেশের মধ্যে রফতানি ও আমদানি বাড়াতে চুক্তি করেছি। এসব দেশগুলোকে আমাদের চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহরের অনুমোদন দিয়েছি। তাছাড়া চার দেশ মিলেও বিশেষ অর্থনৈতিক সড়ক করছি। ফলে পণ্য আমদানি-রফতানিতে সব দেশই সুবিধা পারে। এছাড়া বাংলাদেশ এশিয়ার রেলওয়েতে যুক্ত হচ্ছে। ফলে সব মিলিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগের উপর্যুক্ত স্থানে পরিণত হচ্ছে।’

Leave a Reply

More News from বাংলাদেশ

More News

Developed by: TechLoge

x