নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি তিস্তা চুক্তির পদ্ধতি প্রস্তাব করতে পারেন * ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আসছেন ৮ এপ্রিল

নিউজ ডেস্ক,বাংলাদেশঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন। এ সময়ে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের কোনো পদ্ধতির প্রস্তাব করতে পারেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে আগামী ৮ এপ্রিল দু’দিনের সফরে ঢাকায় আসতে পারেন। এছাড়া রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সোলার সামিটে যোগ দিতে পাঁচ দিনের সফরে ভারতে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল শিগগিরই ভারত সফরে যাচ্ছে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের প্রতিনিধি দলও ভারত সফরে যেতে পারে। সূত্র বলছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দুই মেয়াদে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১০৮ চুক্তি সই হলেও বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সই হয়নি। শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অঙ্গীকার করেছিলেন, তার আমলেই তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হবে। ভারতের দ্য ইকোনমিক টাইমস পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, আগামী মাসগুলোতে মোদি ভুটান, বাংলাদেশ ও নেপাল সফর করতে পারেন। এ সময় ভুটান ও বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হবে। দুই নির্বাচনের গুরুত্ব অনুধাবন করে মোদি সফরসূচি নির্ধারণ করছেন বলে খবরে বলা হয়। মোদি বাংলাদেশে এসে তিস্তা চুক্তি সই করলে তা হবে বাংলাদেশের প্রতি তার বড় অঙ্গীকার পূরণ।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের এবারের ভারত সফরকালে সোলার সামিটের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আমন্ত্রণে পার্টি টু পার্টি সম্পর্কের আওতায় ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সফর হচ্ছে। নির্বাচনের আগে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের এ যোগাযোগ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি বর্জন করলেও ভারত ওই নির্বাচনকে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বলে সমর্থন দিয়েছিল। যদিও পশ্চিমা দেশগুলো একতরফা নির্বাচনে হতাশা ব্যক্ত করে। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়। কিন্তু ভারত এ বিষয়ে তেমন কিছু না বলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করছে।মোদির সম্ভাব্য সফর সম্পর্কে ঢাকার তরফে কিছু বলা হয়নি। তবে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক প্রশ্নের জবাবে শনিবার নিশ্চিত করেছেন যে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে ঢাকায় আসছেন। ঢাকায় কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ ও ৯ এপ্রিল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশ সফর করবেন। এ সফরের বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে, নতুন পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে তিনি ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের বিষয়টি সার্বিক পর্যালোচনা করবেন। বাংলাদেশে বিগত সাধারণ নির্বাচনের আগে তৎকালীন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে সাংবিধানিভাবে বাধ্যতামূলক বলে সমর্থন দিয়েছিলেন। ওই সময়ে বাংলাদেশে সহিংস পরিস্থিতি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনে সরকার।

দ্য ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছরে সাধারণ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে ঢাকা ও থিম্পুর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করতেই মোদি এ দু’দেশ সফর করতে যাচ্ছেন। ভুটানে ভারতের সমর্থনপুষ্ট নতুন বিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ তিস্তা চুক্তির জন্য অপেক্ষা করছে। তিস্তা চুক্তি হলে নির্বাচনের বছরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি জনসমর্থন বৃদ্ধি পাবে। তবে মোদির সফরের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি অলি দেশের বাইরে প্রথম সফর হিসেবে দিল্লিতে স্বাগত জানাতে চান মোদি। চলতি বছরে চতুর্থ বিমসটেক সামিটে যোগ দিতে মোদি নিজেও কাঠমান্ডু সফরে যেতে পারেন বলে ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে বলা হয়েছে। ভুটানের নির্বাচন ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র সচিব ও সেনাপ্রধান একসঙ্গে ভুটান সফর করেছেন।ঢাকায় ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, ভারতের রাজনৈতিক নেতারা তিস্তা চুক্তি সই করার পক্ষে সদিচ্ছা পোষণ করেন। তবে এ চুক্তি সই করার কোনো সময়সীমা বেঁধে দেয়া সম্ভব নয়। চুক্তির ব্যাপারে সমঝোতা হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা সই করা হবে।মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২০১৪ সালে প্রথম সফরে ভুটান যান। ২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সফর করেন। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের এপ্রিলে ফিরতি সফরে ভারত যান।

Leave a Reply

More News from বাংলাদেশ

More News

Developed by: TechLoge

x