আলোচনা অব্যাহত থাকবে: ওবায়দুল কাদের
ডেইলিইউকেবাংলা নিউজঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) আধুনিক পদ্ধতি,আমরা একে সাপোর্ট করছি।তবে এবার ইভিএম হয়তো ইসি সীমিতভাবে ব্যবহার করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন,অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপশেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।সংলাপে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন ড.কামাল হোসেন।ওবায়দুল কাদের আরো বলেন,নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ট নিরপেক্ষ অনুষ্ঠানের জন্য।সব দায়িত্ব তাদের।তফসিলের পর দায়িত্ব ইসির ওপর ন্যস্ত হবে।নির্বাচন নিয়ে ভয়ের,শঙ্কার কারণ নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন,নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পর্যবেক্ষকরা আসবেন এতে আমাদের আপত্তি নেই।ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা রাজনৈতিক মামলার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড.কামাল ও ফখরুল সাহেবকে লক্ষ্য করে বলেছেন,যেসব মামলা মনে হয়েছে রাজনৈতিক মামলা তার একটা সংখ্যা পৌঁছে দেওয়ার জন্য।কাদের বলেন,চিঠির উত্তরে ছিল সংবিধানসম্মত সব বিষয়ে আলোচনা হবে।গণতন্ত্র এর ধারা অব্যাহত থাকবে।তিনি আরো বলেন,আমরা সংবিধানের বাইরে যেতে পারি না।কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন হয় না।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন,শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন অবাধ,সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বস্ত করছি।সরকার হস্তক্ষেপ করবে না।তিনি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন।বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের বলেন,এটা আদালতের বিষয়।এ বিষয় সংলাপের মধ্যে আসতে পারে না।দুইটি মামলা কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা।
কাদের বলেন,প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের বলেছেন,এ মামলা আমি ক্লেইম করি নি।এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে।এটা তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।সেনাবাহিনী নিয়োগের বিষয়ের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ড.কামালকে বলেছেন,আপনিতো নির্বাচন করেছেন। ২০০১ সালের নির্বাচন ছাড়া কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার ছিল না।তাহলে এখন কেন চান?
সংলাপ আর হবে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন,তাঁরা আসলেই হবে।তারা যদি মনে করে আসার দরকার।তাহলে আমরা আমন্ত্রণ জানাব।স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন,আলোচনা সফল হয়েছে,ফলপ্রসূ হয়েছে।ওরা যখন চায়,আলোচনা করতে পারবে।গণভবনের দরজা খোলা আছে।আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড.আবদুর রাজ্জাক বলেন,আলোচনা আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে হয়েছে।
আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন,এখানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা নিয়ে কথা হয়েছে।এখানে সবগুলো দাবি আদালত সম্পর্কিত,নির্বাচন কমিশন সম্পর্কিত ও সংবিধান সম্পর্কিত।সংবিধানের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই এটা তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।আদালত খালেদা জিয়াকে জামিন দিলে তিনি মুক্তি পাবেন।আরো সংলাপের প্রয়োজন কিনা জানতে চাইলে রেজাউল করিম বলেন,আমরা প্রয়োজন মনে করি না।যদি তারা মনে করেন,প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে থেকে বলে দেওয়া হয়েছে তারা যেকোনো সময় আসতে পারেন।তবে সব কিছুই হতে হবে সংবিধানসম্মত।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শুরু হয়। সংলাপ শেষে রাত পৌনে ১১টার পর দুই জোটের নেতারা একে একে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসেন।এর আগে ১৪ দলীয় জোটের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন ড. কামাল হোসেন।গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।এরপর তাঁর সূচনা বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় সংলাপ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আজকে এই অনুষ্ঠানে আপনারা এসেছেন,গণভবন ও জনগণের এই ভবনে আপনাদের স্বাগত।শেখ হাসিনা বলেন,বাংলাদেশের জন্য যে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্র অব্যাহত রেখেছি। সেক্ষেত্রে এই বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি।এ ছাড়া এই দেশটা আমাদের সবার।মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা,দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন-এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমি এটা বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দেব।দীর্ঘ ৯ বছর ১০ মাস হতে চলল,আমরা এই সময়ের মধ্যে দেশে কত উন্নয়ন করতে পেরেছি সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন।এতে এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে।দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম সেই দিনবদল হচ্ছে।এটাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন করে।লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা।আমাদের মহান নেতা জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি।আজকে সেই স্বাধীনতার সুফল যেন,প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্যে।সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে গণভবনে প্রবেশ করেন ১৪ দলের নেতারা।এর ২০ মিনিট পর প্রবেশ করেন ড.কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
এদিকে সংলাপে অংশ নিতে বিকেল ৪টায় ড.কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।বৈঠকে সংলাপের এজেন্ডা ঠিক করা হয়।এর আগে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি পেয়ে সংলাপে যেতে ১৬ নেতাকে নির্বাচন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।আর সংলাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে আজ আরো পাঁচজনকে যুক্ত করে তারা।ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া এক চিঠিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।সিদ্ধান্ত হয়,বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান,জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহও যোগ দেবেন সংলাপে।এঁদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়া অন্যরা সংলাপে যোগ দেন।
More News from বাংলাদেশ
-
খুলনায় মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হত্যা, ৩ আসামী গ্রেফতার,আসামীদের সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন
-
গোলাপগঞ্জে আব্দুল মতিন ও ছায়া খাতুন ট্রাস্টের পক্ষে পিপিই প্রদান (ভিডিও সহ)