শুনানি শেষে কারাগারে খালেদা জিয়া

ডেইলিইউকেবাংলা নিউজঃ নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পুরাতন কারাগারে নেওয়া হয়েছে।আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন ১৪ নভেম্বর।বৃহস্পতিবার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৯-এ এই অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।আদালতে নিজের অভিযোগ গঠনের শুনানি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ নিজেই করেন।তিনি আংশিক অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে অসুস্থতা জনিত কারণে শুনানির পেছানোর আবেদন করেন।পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ১৪ নভেম্বর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।এর আগে মামলার অন্যতম আসামি খালেদা জিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারের ভেতরে স্থাপিত আদালতে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হাজির করা হয়।

তবে এর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানিয়েছিলেন,আদালতে হাজিরা শেষে খালেদা জিয়াকে আবারও বিএসএমএমইউতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে নাকি এই কারাগারে যেখানে তিনি (খালেদা জিয়া) আগে ছিলেন দোতলার সেই কারাকক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে তা নিশ্চিত নয়।নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১১ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ নির্ধারণ ছিল।তবে খালেদা জিয়ার শারীরীক অসুস্থতার কথা বলে বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা আদালতে সময় আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।পরে অভিযোগের গঠনের শুনানির জন্য ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক মাহমুদুল হাসান।এ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার কারণে মামলাটির এজলাস নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে বসানো হয়েছে।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এই মামলা দায়ের করা হয়।২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া।শুনানি শেষে ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই নাইকো দুর্নীতির মামলার কার্যক্রম দুই মাসের জন্য স্থগিত ও রুল জারি করে আদালত।পরে ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়।পরে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলবে বলে গত বছর ১৮ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।বিচারপতি মো.নুরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দেন। এ সংক্রান্ত ইতোপূর্বে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেন আদালত।রায় প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।সে অনুযায়ী গত বছরের ৩০ নভেম্বর তিনি আত্মসমর্পণ করেন।এরপরেই মামলাটির অভিযোগপত্র গঠন নিয়ে বেশ কয়েবার শুনানির তারিখ নির্ধারণ হলেও খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের আবেদনে তা বার বার পিছিয়ে যায়।

এদিকে,নাইকো মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি না হলেও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন বিশেষ জজ আদালত।সেদিনই তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারে পাঠানো হয়।পরে শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে গত ৬ অক্টোবর কারাগার থেকে বিএসএমএমইউ-এ নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।এখানে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে থাকাবস্থাতেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বাদীপক্ষ দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনে (দুদক) হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়ে খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।এছাড়াও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের পৃথক মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে বিশেষ জজ আদালত।তার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাসহ আরও ৩২টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

Leave a Reply

More News from বাংলাদেশ

More News

Developed by: TechLoge

x