পর্যবেক্ষকরা গণমাধ্যমে কথা বলতে পারবেন না : ইসি সচিব

ডেইলিইউকেবাংলা নিউজঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা পর্যবেক্ষক হবেন তারা ভোটকেন্দ্রে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকবেন। তারা শুধুমাত্র ভোট কেন্দ্রে কোনো অনিয়ম হচ্ছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করবেন, কোনো মিডিয়ার সাথে নির্বাচনবিরোধী বিরূপ মন্তব্য বা কথা বলতে পারবেন না। ছবি তুলতে পারবেন না, গোপন কক্ষে যেতে পারবেন না। মোবাইলফোন ব্যবহার করতে পারবেন না।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।

নিবন্ধন যাতে বাতিল না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে দায়িত্ব পালনের  আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। কোনও সংস্থা  নীতিমালার বাইরে গিয়ে কিংবা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করে,এমন কাজে লিপ্ত হলে নিবন্ধন বাতিল করা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন।

মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব এসব কথা বলেন।নির্বাচন আর পেছানো হবে না উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন,এবারের নির্বাচন একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নির্বাচন।কারণ, এই নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে। এবারের নির্বাচনে সংসদ বহাল থাকবে,সরকার থাকছে এবং সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে।ফলে এবারের নির্বাচন হবে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক।আমি আশা করবো,এবারের নির্বাচনটা সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন,এবার প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ১১৯টি পর্যবেক্ষক সংস্থাকে নিবন্ধন দিয়েছিলাম।তার মধ্যে একটি সংস্থার বিরুদ্ধে এনজিও ব্যুরো থেকে এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দফতর থেকে অভিযোগ আসায় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুসরণ করে সেটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন,একটি সেন্টারে অনেকগুলো সংস্থা ও লোক থাকবে।পোলিং অফিসার,রিটার্নিং অফিসার,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গণমাধ্যম থাকবে।এসব বিষয়গুলো মাথায় রেখে আপনাদের জন্য যে নীতিমালা সেটি অনুসরণ করে দায়িত্বপালন করবেন।

সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে সচিব আরও বলেন,একজন পর্যবেক্ষকের কারণে কিন্তু আপনি নিজেও বিপদে পড়ে যাবেন।পর্যবেক্ষণ করার সময়  কোনও শর্ত ভঙ্গ হলে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেতে পারে।এজন্য খুব সতর্কভাবে এ পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ফলো করে দায়িত্বপালন করবেন।পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের উদ্দেশে সচিব বলেন,যখন আপনারা পর্যবেক্ষক নিয়োগ করবেন,তখন কয়েকটি সাবধান বাণী উচ্চারণ করবেন।নির্বাচন কমিশনের দেওয়া পরিচয়পত্র সার্বক্ষণিক গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে।যাতে যে কেউ বুঝতে পারেন যে,আপনি একজন পর্যবেক্ষক।প্রথমে কেন্দ্রে গিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে নিজের (পর্যবেক্ষকের) পরিচয় দিতে হবে। কেন্দ্রে কোনও মোবাইল ফোন নেওয়া যাবে না।কোনও ছবি তুলতে পারবেন না।কোনও কমেন্টস করতে পারবেন না।শুধু মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন।

সচিব আরও বলেন,অনেক সাংবাদিক তাদের সামনে ক্যামেরা ধরবেন,উনি কিন্তু কথা বলতে পারবেন না।কোনও সংবাদ মাধ্যমে লাইভে কথা বলতে পারবেন না,কমেন্টস করতে পারবেন না।ব্রিটেনের পুলিশের মতো মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে শুধু পর্যবেক্ষণ করবেন।  আপনাদের কাছে লিখিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার আগে কোনও মন্তব্য করবেন না।আপনারাও যখন কম্পাইল করে জমা দেবেন,তার আগে  কোনও কমেন্টস করবেন না।রিপোর্ট কম্পাইল হলে প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন এবং আমাদের কাছে জমা দিতে পারেন।আপনাদের আচরণ হবে নিউট্রাল।এমন কোনও ব্যক্তিকে আপনারা নিয়োগ করবেন না,যিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য।এগুলো আপনাদের খেয়াল রাখতে হবে।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সচিব বলেন,একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন নিবন্ধন যাতে বাতিল না হয়।সেদিকে আপনারা খুব বেশি খেয়াল রাখবেন।আপনারা অনেকে কিন্তু এনজিও হিসেবে কাজ করেন।অন্যান্য কাজের পাশাপাশি আপনারা নির্বাচনেও কাজ করেন।কিন্তু এখান থেকে যদি আমরা রিপোর্ট দেই যে,আপনি এই ধরনের একটি আচরণ করেছেন,যেটার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে।তাহলে কিন্তু আপনার নিবন্ধনটা বাতিল করার জন্য যারা নিবন্ধন দেয়,তাদেরকেও আমরা চিঠি দিয়ে দেবো।সুতরাং বি কেয়ারফুল।আপনারা এমন কোনও আচরণ করবেন না,এমন কোনও কাজ করবেন না,যেটার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়াটা ভণ্ডুল হতে পারে বা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।

Leave a Reply

More News from বাংলাদেশ

More News

Developed by: TechLoge

x