আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাহিদার অর্ধেক আগাম দিয়েছে ইসি

ডেইলিইউকেবাংলা নিউজঃ একাদশ সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য ২৭১ কোটি ৮৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা আগাম বরাদ্দ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পুলিশ,র‌্যাব,বিজিবি,আনসার-ভিডিপি ও কোস্টগার্ডের জন্য এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী দুই-একদিনের মধ্যে এই বরাদ্দ তাদের কাছে পৌঁছে যাবে।নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।জানা গেছে,আগাম বরাদ্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে আনসার ও ভিডিপির জন্য।এই বাহিনীর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৬৩ কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।এরমধ্যে খোরাকি বাবদ ১৪১ কোটি ৩৭ লাখ ৫১ হাজার টাকা,জ্বালানি বাবদ ৫ কোটি ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা,মনোহারি দ্রব্য বাবদ ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং আপ্যায়ন ব্যয় ১২ কোটি ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।পুলিশের জন্য আগাম বরাদ্দ হয়েছে ৬৩ কোটি ২২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।এরমধ্যে খোরাকি ৩৬ কোটি ১৬ লাখ ৪৭ হাজার টাকা,জ্বালানি খাতে ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, মনোহারি দ্রব্য খাতে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা,আপ্যায়ন ব্যয় ৩ কোটি ১ লাখ ৩৭ হাজার ও যানবাহন (ভাড়া ও মেরামত) বাবদ ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জন্য আগাম ৩৩ কোটি দুই লাখ ৪৩ হাজার বরাদ্দের মধ্যে খোরাকি ১১ কোটি ৫০ লাখ ৬৫ হাজার,জ্বালানি ৩ কোটি ৩৫ লাখ,মনোহারি দ্রব্য ২১ লাখ ৩৩ হাজার,আপ্যায়ন ব্যয় ৩৩ লাখ ১৫ হাজার,যানবাহন ১৬ কোটি ৩ লাখ ৭১ হাজার ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।র‌্যাবের জন্য আগাম ১০ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে খোরাকি খাতে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৮৯ হাজার,জ্বালানি খাতে ৩ কোটি ২৪ লাখ ৬৪ হাজার,মনোহারি ৫০ লাখ,আপ্যায়ন ব্যয় ২৮ লাখ ৭৫ হাজার, যানবাহন বাবদ ২ কোটি ৫২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য আগাম ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে খোরাকি খাতে ২৫ লাখ,জ্বালানি খাতে ৮৪ লাখ,মনোহারি ৩ লাখ,আপ্যায়ন ব্যয় ২ লাখ,যানবাহন বাবদ ৪২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।জানা গেছে,নির্বাচন কমিশনের প্রাথমিক খসড়া বাজেটে ৪১০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হলেও এর পরিমাণ বাড়ছে।নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা খাতে যে বরাদ্দ রেখেছে সেনাবাহিনীর বরাদ্দ ছাড়াই সেই অর্থ অন্যান্য বাহিনীর জন্য দিতে হচ্ছে।এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর জন্য আলাদাভাবে বাজেটের প্রয়োজন হবে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে,নির্বাচনে পুলিশ চারদিন থাকলেও এবার সাতদিন থাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।এরমধ্যে পুলিশ সদস্যরা নির্বাচনের সময়ে থাকবেন চারদিন,মোতায়েনের আগে দুইদিন ও প্রত্যাগমনের জন্য একদিন— এই মোট সাতদিন ধরে ৪২৪ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।তবে কমিশনের প্রাথমিক বাজেটে ১২০ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে এ বাহিনীর জন্য বরাদ্দ দেড়শ কোটি টাকার কিছু বেশি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।নির্বাচনে পুলিশের ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জন সদস্য মোতায়েন থাকবেন।এরমধ্যে এসপি থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তা রয়েছেন ৩৪৯ জন।পুলিশের জন্য বরাদ্দ টাকার অর্ধেক নির্বাচনের আগে ও বাকি অর্ধেক নির্বাচনের পরে ইসির বরাদ্দ দেওয়ার কথা রয়েছে।আনসার সদস্যদের জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।কিন্তু তারা এর দ্বিগুণ টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কমিশনের কাছে ৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে।তবে কমিশনের পক্ষ থেকে তা কাটছাঁট করে ৩৫ কোটি টাকা হতে পারে।
নির্বাচনে কোস্টগার্ডের সদস্যরা কক্সবাজার,বরিশাল,ভোলা,পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন।তারাও মাঠে সাতদিন অবস্থান করবেন।এ বাহিনীর জন্য কমিশন ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে।
জানা গেছে,২০১৪ সালের নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ৫৭ কোটি ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৭৪০ টাকা বরাদ্দ ছিল। এছাড়া পুলিশের জন্য ৫৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৯ টাকা,বিজিবির জন্য ১৭ কোটি ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩৫ টাকা এবং আনসার বাহিনীর জন্য ৬৩ কোটি ২১ লাখ ৯৯ হাজার ৩০২ টাকা বরাদ্দ ছিল।এবারই প্রথমবারের মতো ভোটকেন্দ্রের পাহারায় নির্বাচনে নামানো হচ্ছে গ্রাম পুলিশ (দফাদার ও চৌকিদার)।তারা মাঠে থাকবেন দুই দিন।ভোটের মাঠে দুই দিন দায়িত্ব পালন করবেন প্রায় ৪৫ হাজার গ্রাম পুলিশ।এ জন্য তাদের জনপ্রতি এক হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে।

Leave a Reply

More News from বাংলাদেশ

More News

Developed by: TechLoge

x