নতুন মাদক আমাদের ভাবিয়ে তুলছে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডেইলিইউকেবাংলা নিউজঃ নতুন মাদক এনপিএস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ভাবিয়ে তুলছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।তিনি বলেন,এনপিএস নামে নতুন মাদক আমাদের ভাবিয়ে তুলছে।আমাদের দেশে কিন্তু আমরা কোনও মাদক তৈরি করি না।পার্শ্ববর্তী দেশ ও মাদক উৎপাদনকারী দেশ থেকে এই মাদক আমাদের দেশের সীমান্ত পার হয়ে আসছে।এই কাজে যারা মূল ভূমিকায় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তৎপর রয়েছে।আইনগত দুর্বলতা ও ফাঁকফোকরের কারণে প্রকৃত অপরাধীরা সুযোগ নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যায়।তবে সংশোধিত আইনে সে সুযোগ থাকবে না।আমরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় যথেষ্ট সফল হয়েছি।আমরা অবৈধ মাদক ঠেকাতেও সফল হবো ইনশাল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২০ ডিসেম্বর) ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,২০১৮’এর প্রায়োগিক বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা জন্য ‘বিস্তরণ কর্মশালা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।সেগুনবাগিচায় মাদকদদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. জামাল উদ্দিন আহমেদ।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,নানা কারণকে সামনে রেখে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ প্রয়োজনীয় সংস্কার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন,২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে।আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে নতুন এই আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সব আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর একযোগে কাজ করবে।
মন্ত্রী বলেন,বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।নিম্ন আয়ের দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে মধ্যম আয়ের দেশের দ্বারপ্রাপ্তে।আমাদের প্রবৃদ্ধির অংশীদার আমাদের দেশের মানুষ।কারণ জনসংখ্যার অর্ধেকই কর্মক্ষম জনশক্তি। এদেশের জনশক্তির ৯২ শতাংশেই আমাদের যুবসমাজ।আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত লক্ষ-কোটি তরুনই আমাদের দেশকে বদলে দেবে।কিন্তু প্রধান বাধা হচ্ছে মাদক।নেশার ছোবলে পড়লে এই যুব সমাজের কর্মশক্তি,সেবার মনোভাব ও সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলে এবং জাতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন,যুব সমাজ আমাদের সম্পদ।কিন্তু দেশে নতুন নতুন মাদকের আবির্ভাব ঘটছে। মাদকাসক্তরা এই নতুন নতুন মাদকের দিকে ধাবিত হচ্ছে।এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।বর্তমানে ইয়াবার মতো মাদক আমাদের সমাজ পরিবার বিষিয়ে তুলছে,সব শ্রেণির মানুষকে প্রভাবিত করছে।সমাজের দরিদ্র শ্রেণি থেকে শুরু করে দিনমজুর,স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও বিত্তশালী শ্রেণিসহ বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে ইয়াবার ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।নতুন আইনে ইয়াবা পাচার ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।২০০ গ্রামের উর্ধ্বে এমভিটামিনযুক্ত ইয়াবা আটকে সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কিংবা মৃত্যুদণ্ড।আর গডফাদারদের জন্য মানিলন্ডারিং মামলায় শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।আর যে কোনও নতুন মাদক আবির্ভাব ঘটলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ব্যবস্থা নিতে পারবে।
আইনের ফাঁক গলিয়ে কেউ যাতে অবৈধ সুবিধা নিয়ে মাদকের ব্যবসা করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,বর্তমান সরকার অধিদফতরকে শক্তিশালী করতে জনবল বৃদ্ধি করে ১ হাজার ৭০৬ থেকে ৪ হাজার ৪২ জনে উন্নীত করা হয়েছে।যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।ঢাকাসহ বিভাগীয় পর্যায়ের ৬টি নতুন কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে।বর্তমানে চট্টগ্রামে নতুন রাসায়নিক গবেষণাকার চালুর বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।অফিদফতরের লজিস্টিক সাপোর্ট বাড়ানোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় চেষ্টা চলছে।কিশোর বয়স থেকেই যুবসমাজের মধ্যে মাদকবিরোধী সচেতনতা বাড়াতে পাঠ্যপুস্তকে মাদকবিরোধী পাঠ যুক্ত করা হবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন,মাদকের ডিমান্ড থাকলে সাপ্লাই হবেই।ডিমান্ড ও সাপ্লাই কী করে বন্ধ করা যায় সেটা আগে দেখার বিষয়।আমাদের অধিফতর নতুন আইন প্রয়োগ করলে আশা করি সাপ্লাই ও ডিমান্ড কমে যাবে।
More News from বাংলাদেশ
-
খুলনায় মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাৎ হত্যা, ৩ আসামী গ্রেফতার,আসামীদের সর্বোচ্ছ শাস্তির দাবিতে মানব বন্ধন
-
গোলাপগঞ্জে আব্দুল মতিন ও ছায়া খাতুন ট্রাস্টের পক্ষে পিপিই প্রদান (ভিডিও সহ)