লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে মনিরুল ইসলাম কবীর ও শিরীন আখতার কে নিয়ে কেন এত জল্পনা কল্পনা?
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী।। কবে কিভাবে পরিচয় ঘনিষ্টতা এখন আর মনে নেই, ২০১৪/১৫ সালের কথা, কোনো এক প্রোগ্রামে দেখা হয়েছিল লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারী মনিরুল ইসলাম কবীর সাহেবের সাথে। কার্ড দিয়ে বলেছিলেন, আমি কবীর বাংলাদেশ হাইকমিশনে কাজ করি। আমি আমার কার্ড দিয়ে বলেছিলাম স্যার আমি চ্যানেল আই লন্ডন অফিসে এ কাজ করি। কবীর সাহেব বলেছিলেন আপনাকে আমি চিনি। এ পর্যন্তই। তারপর অনেক দিন দেখা সাক্ষাত নেই। ২০১৫ সালের শেষের দিকে হঠাৎ করে হিথ্রো বিমান বন্দরের কাছে সাউথ-অল নামক জায়গায় বৃটিশ বাংলাদেশীদের এক প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম, গিয়ে দেখি বাংলাদেশ হাইকমিশনের এডুকেশন বিভাগে কাজ করেন শিরীন আক্তার নামক এক সুন্দরী মহিলা বসে আছেন। অর্গেনাইজার যারা ছিলেন তারা বললেন শিরীন আক্তারের পাশে বসতে। আমি কালো মানুষ, গায়ের রং কালো না হলেও শ্যামলা, আমি বসতে চাইনি শিরীন আক্তারের পাশে, শিরীন জিজ্ঞেস করলেন, বসতে কি কোনো অসুবিধে? বললাম না তবে আপনার পাশে বসলে আমাকে আরো কালো দেখাবে, বললেন বসে পড়ুন, বসলাম, কথা বলতে আমি ইতস্তত করছি, সুন্দরী মহিলাদেরকে আমাদের সমাজের লোকেরা ফ্লেটারী করে। ফেইসবুকে কোনো মহিলার ছবি দেখলে আহ-উহ বলা শুরু করে দেয় এক শ্রেণীর নির্লজ্জ পুরুষরা। কে যেন বলেছিল আমার চরিত্রের সাথে ফ্লেটারী মানায়না, এবং ব্যাক্তিগতভাবে আমি সেটি পছন্দও করিনা।
সে যাক, এক সময় কথা বলতে হলো শিরীনের সাথে, শিরীন বললেন আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তিনি। মনে মনে বলি মহিলা বলে কি? কারণ ঐ এলাকার এমপিও ছিলেন উপস্থিত, পজিশন অনুযায়ী এমপি হবে প্রধান অতিথি। আমি বিশেষ অতিথি, শিরীন বিশেষ অতিথি হতে পারেন। কিন্তু না শিরীনকে প্রধান অতিথি করেই শুরু হলো অনুষ্ঠান। এমপি আমার পূর্ব পরিচিত ছিলেন, বললেন হোয়টস গয়িং অন? বলেছিলাম মিস্টেইক। বললো ইটঁস নট এ মিস্টেইক, ইঁটস এ ব্লান্ডার। আমি বলেছিলাম ফরগেট এন্ড ফরগিভ স্যার। তারপর কথা আর বাড়াইনি। অনুষ্টান শেষ হলো, আমরা দর্শক সাড়িতে বসেছিলাম, শিরীনকে কবীর ভাইর কথা জিজ্ঞাস করলাম, শিরীন বললেন তিনি ভালোই আছেন। এক সময় দেখলাম শিরীন উঠে যাচ্ছেন, বললেন মাগরীবের নামাজ পড়তে যাচ্ছেন। কিন্তু আমি দেখলাম নামাজ পড়ার কোনো জায়গা নেই। তিনি গাড়ীতে বসেই নামাজ আদায় করলেন। মনে মনে বললাম শিরীন তো অনেক ভালো মানুষ। নামাজ শেষ করে তিনি আবারো আসলেন। আমি চলে আসবো, বলেছিলাম আমি যাবো, রাতে আমার টক শো আছে। কার্ড দিলাম, কিছু কথাবার্তা বলে বিদায় নিলাম শিরীনের কাছ থেকে। তারপর আর দেখা নেই। দুএকদিন কাজে গিয়েছিলাম হাইকমিশনের অফিসে, একদিন দেখা হয়েছিল শিরীনের সাথে, আরেকদিন দেখা হয়নি। তবে মনিরুল ইসলাম কবীর সাহেবের সাথে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হয়, দেখা হয় মহামান্য রাষ্ট্রপতি লন্ডনে যখন চিকিৎসার জন্য আসেন তখন।
এরই মধ্যে লন্ডনে খবর প্রচারতি হয় শিরীন ঢাকার সেলিব্রিটি সাংবাদিক জ.ই. মামুন সাহেবকে বিয়ে করেছেন। মামুন সাহেবের পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা জোবায়দা নাসরিন কনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম শিরীন আখতারের বিয়ের খবর। শুনে ব্যাথিত হলাম। কারণ দাওয়াত পাইনি। দাওয়াত না পেলেও সমস্যা নেই, কথায় বলে পয়সা যখন মানুষের হাতে থাকে তখন বিয়ে করে, কে কাকে জিজ্ঞাস করে! শিরীন আখতারের বিয়ের সংবাদ শুনে মনে মনে শুভ কামনা জানালাম। তবে বিয়ের পরে মামুন সাহেবের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ আমি শুনেছিলাম যে শিরীন যাকে বিয়ে করেছেন তার পরিবার নাকি রাজাকার, আমাকে অনেকেই বলেছেন এ খবরটি, আমাকে বলার কারন ছিল যেহেতু শিরীনকে আমি চিনি, আমি অবশ্য সে দিন বলেছিলাম মামুন সাহেবের পরিবার কি তা আমি জানিনা, তবে শিরীনের নানা শহীদ বুদ্ধিজিবী একে এম নুরুল হক সাহেব যিনি বঙ্গবন্ধুর ভাষন ওয়ারলেসে প্রচার করেছিলেন। এবং শিরীনের পরিবারের অনেক সদস্য মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। অবশ্য জ.ই. মামুন সাহেবকে বিয়ে করে শিরীনকে রাজাকারের অপবাদ শুনতে হয়েছে। তবে ভালোবাসার জয় হয়েছে…….
সে যাক, তারপর দিন যায়, মাস যায়, কারো কোনো খবর নেই, কেউ কারো খবর রাখে না, যান্ত্রিক এ জীবনে মানুষ ছুটে চলে যন্ত্রের মত, ফিরে থাকানেরা মত সময় যেন কারো নেই, বাংলাদেশে বড় হয়ে লন্ডনে আসা আমার মত অনেকেই লন্ডনের যান্ত্রিক জীবনে হাপিয়ে উঠেন, আমি মাঝে মধ্যে গ্রামের মেটো পথ খুঁজি যে পথ আমাকে হাতচানি দিয়ে ডাকে, কিন্তু পাইনা। আমি যখন খুঁজি গ্রামের কোনো নববধু কলসী হাতে পুকুর থেকে পানি নেয়ার দৃশ্য আমি তা দেখতে পাইনা। আমি খুঁজি গ্রামের কোনো মেয়ে আমার দিকে সহজ সরলভাবে হা করে থাকেিয় আছে আমি তার সাথে প্রেম নিবেদন করবো, কিন্তু পাইনা, আমি শহরের মেয়েদেরকে দেখতে দেখতে ফেডআপ, এদের কোনো লজ্জা শরম নেই, এদের মধ্যে গভীর মমত্ববোধ ভালোবাসা নেই, ওরা গ্রামের মেয়েদেরকে সমালোচনা করে। ওরা তসলিমা নাসরিনকে ফলো করে। সব কিছুতেই অধিকারের কথা বলে। শর্তহীন ভালোবাসার মধ্যে কিসের অধিকার? আমি এসব ভালোবাসা নিয়ে মাঝে মধ্যে ভাবি। কৃত্রিম ভালোবাসা যেন এ সমাজ ব্যবস্থাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। সমাজে তালাকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ভালোবাসা শ্রদ্ধা দিন দিন সমাজ থেকে লোপ পাচ্ছে।
সে যাক, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, এবং বিবিসি বাংলা বিভাগের মানুষের সাথে কমিউনিটির সাধারন মানুষের যোগাযোগ খুব একটা নেই বললেই চলে। এখানে রয়েছে সিলেটি নন সিলেটি সমস্যা। সিলেটের বাইরের জেলাগুলোর কিছু কিছু লোক লন্ডনে আছেন তারা মনে করেন সিলেটিরা অশিক্ষিত। লাঙ্গল টু লন্ডন, কেউ কেউ লন্ডনে বসে ফেইসবুকে লিখে সিলেটিরা এমসি কলেজ চিনে কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিনেনা। যে লিখে তাদের লিখার উত্তর দেয়ার মত এক শ্রেণীর কবি সাহিত্যিকরাও মাঠে নেমে পড়েন, প্রতিবাদ করার জন্য। কিছুদিন আগে এমনই এক লেখা আমাকে পাঠান আমার এক বন্ধু। বলেন পড়ুন, আমি পড়িনি, কারন ফালতু লেখা পড়ার সময় কোথায়? লন্ডনে কিছু আতেল আসেন ঢাকা থেকে, তারা লন্ডনের বাস্তবতা না বুঝে কথা বলেন, কমেন্ট করেন, এসব কথা যে টুয়ান্টীফাস্ট সেঞ্চুরীতে এসে অচল তাদেরকে কে বুঝাবে। লন্ডনে ৯০ এর দশকে যখন পা রাখি তখন দেখেছিলাম বাংলা সাপ্তাহিকীতে বৃটিশ বাংলাদেশী কেউ যদি জিসিএসি, এ লেভেলে ভালো রেজাল্ট করতো তার ফটো পত্রিকায় বড় করে ছাপানো হতো, নীচে ক্যপশনে লিখা হতো অমুকের কৃতিত্ব। অমুখ যাচ্ছেন ক্যমব্রিজে, অক্সফোর্ডে, লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে। ১৯৯৫/৯৬ এ এসে দেখেছিলাম পত্রিকার পাতায় কৃতিত্বের নিউজ আর কেউ দেয়না কারন যে বাড়ীতে চার ভাই, দু বোন সে বাড়ীর কম বেশী সবাই গ্রাজুয়েট ফ্রম অক্সফোর্ড ক্যমব্রিজ লন্ডন ইউনিভার্সিটি। তাহলে তার এমসি কলেজ চিনেই লাভ কি আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিনে লাভ কি? এ সব হাস্যকর কথা লন্ডনে অনেকেই বলেন, বলে শান্তি পান, কারণ তিনি মনে করেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যা সাগর হয়ে গেছেন।
সে যাক, হাইকমিশনের অবস্থাও এক সময় ছিল এ রকম, এখন সময় পাল্টেছে, নতুন যুগের সুচনা হয়েছে পৃথিবীতে। হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তারা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সাথে সহজভাবে মেশার চেষ্টা করেন, কারণ তাদের মধ্যে হয়তো অনেকেই ভাবেন চেতনার স্তর যত নীচেই থাকনা কেন সময়ের বিবর্তনে সে অনেক উপরে উঠে যাবে. আর যিনি আত্মঅহমিকা ভুগছেন তিনি অনেক নীচে পরে থাকবেন।
প্রিয় পাঠক, ধান ভাঙতে শীবের গীত হয়তো গাওয়া শুরু করেছি আমি, যে কারণে আজকের এই লেখা সেটি হচ্ছে কবীর সাহেব এবং শিরীন আক্তার চলে যাচ্ছেন লন্ডন থেকে, সম্প্রতি এ খবরটি প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গনমাধ্যমে। আমি খবরটি পড়ে কিছুটা কষ্ট পেয়েছি, কিছুটা আহতও হয়েছি, এবং মনে মনে এ ও বলেছি আমাদের সাবেক প্রেস মিনিস্টার নাদেম কাদের ভাইর মত “আল্লার বিচার“। আমারও কিছু কষ্ট রয়েছে এ দু কর্মকর্তার উপর। কারন মাস ছয়েক আগে আমি আমার স্ত্রী, স্ত্রীর বড় ভাই, বড় বোনকে নিয়ে হাইকমিশনের লন্ডন অফিসে গিয়েছিলাম একটি পাওয়ার অব এটর্নি করার জন্য। কবীর ভাই এবং শিরীন যেহেতু আমার অত্যন্ত কাছের মানুষ আমার ধারণা ছিল আমাকে তারা উভয়েই সম্মান দিবেন, কাজটি করে দিবেন। কিন্তু দুঃখ পেয়েছিলাম যখন উভয় কর্মকতা আমার কাজটি করে দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন। শিরীন আক্তার সরাসরি বলে দিলেন আগামী সপ্তাহে যদি আপনি কাগজ নিয়ে না আসেন তাহলে আপনার কাজ হবেনা। কবীর ভাই বলেছিলেন কাগজ ছাড়া আপনার মত মানুষ আসেন কি করে? কবীর ভাইর মুরুব্বী-সুলভ কথা আমার কাছে সেদিন ছিল কর্ণপীড়াদায়ক। শিরীনের কথাতো শুনতে আরো খারাপ লেগেছিল। কাজ যখন হয়নি তখন তো বুঝতেই পারেছন আমার স্ত্রীর অবস্থা, সে বলতে শুরু করে-দিল তোমার কোনো মুল্য নেই হাইকমিশনে। আমি আর কি করবো, অগত্যা চলে আসবো এ সময় দেখা হয় এক সিনিয়র অফিসারের সাথে. মন খারাপ দেখে সিনিয়র অফিসার জিজ্ঞাস করেছিলেন ভাই কি কোনো সমস্যা? বলেছিলাম কাজ হয়নি, তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞাস করেছিলেন কি কাজ? বলেছিলাম পাওয়ার অব এটর্নি, উনি বলেছিলেন যারা এই কাজ করে ওরা তো আপনার বন্ধু, কাজ করে দেয়নি? বলেছিলাম জি-না। উনি আমাকে বলেছিলেন দাঁড়ান, কবীর সাহেবকে ডাকলেন, বললেন ফয়সল চৌধুরী সাহেবের কাজ করে দেন। কবীর সাহেব বলতে চেয়েছিলেন স্যার উনার কাগজের সমস্যা। সিনিয়র কর্মকর্তা বললেন যে সব কাগজের সমস্যা রয়েছে সেগুলো ফয়সল চৌধুরী সাহেবকে বলেন আগামী সপ্তাহে দিয়ে যেতে। কবীর ভাই মনে মনে একটু রাগ করেছিলেন কিন্তু কাজ আমার ঐ দিনই হলো। শিরীন আক্তারকে বলেছিলাম কাজ করে দেননি উল্টো হাইকোট দেখালেন আমাকে, আমি কাজ করে ফেলেছি। শিরীন একটু অবাক হলেন কাকে দিয়ে করালাম জানতে চেয়েছিলেন আমি আর শিরীনের সাথে কথা বলিনি। বাসায় আসতে আসতে আমার স্ত্রী আমাকে বলেছিল, কাগজ ছাড়া কাজটি যে ওরা করে দিল তাদের কি সমস্যা হবেনা? স্ত্রীকে বলেছিলাম শিরীন এবং কবীর দুজনই হচ্ছে ভালো আমলা। ওরা বৃটিশ ষ্টাইলে আমাকে কাজটি করে দিতে চায়নি। যে ভদ্রলোক কাজটি করে দিয়েছেন তিনি পরিচয়ের সুত্র ধরেই দিয়েছেন। এবং তিনি বলেছেন যে সব কাজগের শর্ট রয়েছে সেগুলো আগামী সপ্তাহের কোনো একদিন দিয়ে যেতে।
প্রিয় পাঠক, আমি যদিও কাজটি করে নিয়ে এসেছিলাম তবে বাসায় আসতে আসতে মনে হয়েছে আমি ভালো করিনি। কারণ আমি সাংবাদিক হিসেবে ক্ষমতা খাটিয়েছি এবং অফিসার সাহেব মনে করেছেন কাজটি করে দিলেই ঝামেলা শেষ হবে। নতুবা সাংবাদিকরা হচ্ছে নষ্টের মুল কি থেকে কি লিখে ফেলবে, অথবা রিপোর্ট করে ফেলবে। সিনিয়র অফিসার সেদিন চক্ষু লজ্জায় কাজটি আমার করে দিয়েছিলেন কিন্তু শিরীন আখতার এবং কবীর সাহেব সরাসরি কাজটি না করার পক্ষে অটল ছিলেন। হাইকমিশন থেকে ফেরার পরের দিন আমি গেলাম গাড়ীর রোড ট্যক্স করতে একটি কাগজ শর্ট ছিল আমি নিয়ে যেতে ভুলে গিয়েছিলাম, লন্ডনের পোস্ট অফিসে রোড টেক্স করতে হয়, ইদানিং অনলাইনেও করা যায়। পোস্ট অফিসের কর্তা বললেন স্যার গাড়ীর লগ বুক নিয়ে আসেন, লগ বুক হচ্ছে গাড়ীর মালিকানা, বললাম পরে একবার দিয়ে যাবো, ইন্ডিয়ান ভদ্রলোক বললেন সে আইন নেই। পাশে বসা বাঙালী এক মহিলা কর্মকর্তা বলেছিলেন আপনার জন্য আমি অনুরোধ করতে পারি কিন্তু যদি কথা না রাখে। মহিলা কর্মকর্তাকে বলেছিলাম না করবেননা। তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বাসায় এসে লগ বুক নিয়ে গিয়ে রোড ট্যক্স করেছি। সেখানে করার কিছুই নেই।
মনিরুল ইসলাম কবীর সাহেবের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ আমি শুনেছি, কিন্তু আমার সাথে কবীর সাহেব এবং শিরীন আক্তার যা করেছেন যদিও আমার খারাপ লেগেছে তারপরও বলবো তারা ভালো করেছেন। এটাকেই বলে পেশাদারিত্ব।
ইদানিং কবীর সাহেব এবং শিরীরনকে নিয়ে অনেক খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে কেউ কেউ লিখেছেন শিরীন এবং কবীর সাহেব ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন আমি জানিনা তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন কি-না? আমি যা জানি তা লিখলাম, এবং সর্বশেষ আমি শিরীন এবং কবরি সাহেবের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম তাদের অবস্থান। শিরীন বলেছেন এ মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে তাকে ঢাকায় গিয়ে চাকরীতে জয়েন করতে হবে যা অনেক আগেই তাকে জানানো হয়েছে। কবীর সাহেব বলেছেন যেহেতু কবীর সাহেবের স্ত্রী কয়েকমাস আগে ভূল চিকিৎসার কারনে মারা গেছেন এবং তিনি মামলা করেছেন মামলার রায় নভেম্বরে অতএব তাকে নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তারা অনেকেই আমার বন্ধু, কলিগ, ছোট ভাই, অগ্রজ, আমার সবিনয় অনুরোধ প্লিজ নিউজ করার আগে একজন কর্মকর্তার সব কিছু খোঁজ খবর নিয়ে নিউজ করবেন। আপনার নিউজের কারনে একজন মানুষের বারোটা বেজে যাচ্ছে, দুষে-গুনে মিলে মানুষ। হাইকমিশনের কর্মকর্তারা কেউই ফেরেশতা নন, তাদেরও সমস্যা আছে। সমস্যা আছে আমরা যারা গণমাধ্যমে কাজ করি। তবে আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি আমিও এক সময় বিপ্লবী সাংবাদিক ছিলাম, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমি অনেক কিছু শিখেছি অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। মানুষের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা যেমন আমাদের সাংবাদিকদের উচিৎ নয় তেমনি হাইকমিশনে যারা কাজ করেন তাদেরও উচিৎ সাংবাদিক হাইকমিশনে গেলে একটু সম্মান দেয়া। আমি ব্যাক্তিগতভাবে আমার কোনো কাজ থাকলে আমি নিজেই যাই আমার কোনো কলিগ বা ষ্টাপকে হাইকমিশনে পাঠাইনা। কারন কোন সমস্যা সৃষ্টি করে আসবে, আমি ভয় পাই।
সরকারের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ তদন্ত কমিটিতে যাদেরকে পাঠাবেন তাদের সব কিছু দেখেশুনে পাঠাবেন। আমাদের সমস্যা হলো অনেকেই ভায়াস্ট হয়ে কাজ করে। পক্ষ নিয়ে নেয়। অথবা কাউকে বাঁশ দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়। কারন বাঙালীরা প্রতিহিংসায় ভুগে। এবং বেশীরভাগ মানুষ প্রতিহিংসাপরায়ন।
শেষ কথাঃ কবীর সাহেবের কাজের একটি উদাহারন দিয়ে শেষ করি, বছর দুয়েক আগের কথা আমি হাইকমিশনের অফিসে গিয়েছিলাম কি এক কাজে। গিয়ে দেখি বৃটিশ হোম অফিস অবৈধ দুজন বাংলাদেশী ইমিগ্রেনটকে ধরে নিয়ে এসেছে। হাইকমিশনের কর্মকতাদের বলছে এদের ব্যাপারে তথ্য দিতে, হাইকমিশনের অপারপর কর্মকর্তা ও কবীর সাহেব বলছেন সময় লাগবে ৬ মাস। ব্রিটিশ হোম অফিস অথরিটি একটু মনক্ষুন্ন হয়েছিল, একজন বলেছিল ৬ মাস! কবীর সাহেব হেসে বলেছিলেন ইয়েস স্যার। আমি তার হাসির রহস্য বুঝিনি। পরবর্তীতে বুঝেছিলাম রহস্য। কবীর সাহেবকে জিজ্ঞসা করেছিলাম এতদিন কেন লাগবে। উনি বলেছিলেন আপনি বুঝলে সব লিখে ফেলবেন। পরবর্তীতে এক সলিসিটরকে জিজ্ঞাস করেছিলাম ভাই এ রহস্যের কথা আমাকে বলবেন, তিনি বলেছিলেন হাইকমিশন যদি সময় নেয় রিপোর্ট দিতে তাহলে হোম অফিস অবৈধদেরকে ছেড়ে দেয়……..।
লেখক: সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব,সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম,ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ।
(মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন)